Cute Orange Flying Butterfly 2016-09-18 ~ ‎অচিনপুরের আইয়ুব‬
আস-সালামু আলাইকুম। আমি আইয়ুব আনসারি। আমার লেখাগুলো পড়তে প্রত্যহ ব্লগটি ভিজিট করুন

মঙ্গলবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

উপদেশমূলক গল্প

এক কৃষকের একটা গাধা ছিল।
গাধাটা একদিন অগভীর কুয়ায় পড়লো। 

কিন্তু কুয়াটার গভীরতা গাধার উচ্চতা থেকে বেশি হওয়াতে অবলা প্রাণীটি উঠে আসতে পারছিল না। গাধার ত্রাহি চিৎকারে কৃষক এবং আশপাশের মানুষ ছুটে আসল।
কিন্তু ওরাও বুঝে উঠতে পারল না কী করবে।
ঘণ্টা খানেক নানাভাবে চেষ্টা করার পরও যখন গাধাকে উপরে তুলে আনা গেল না, কৃষক তখন চিন্তা করল, কুয়াটা আগে থেকেই বিপজ্জনক। 

বেশ কয়েকটি বাচ্চা কুয়াতে পড়ে বারবার আহত হয়েছে।
কুয়াটা এমনিতেই ভরাট করতে হবে, তার উপর গাধাটা অনেক বুড়ো এবং দুর্বল হয়ে গেছে।
তাই কৃষক সিদ্ধান্ত নিল গাধাসহ কুয়াটি ভরাট করে ফেলবে।
কৃষক সবাইকে ডাক দিয়ে হেল্প করতে বলল। 

সবাই হাতে বেলচা এবং কোদাল নিয়ে পাশ থেকে মাটি কেটে কুয়াতে ফেলতে লাগল।
কিছু মাটির দলা গিয়ে গাধাটির উপরেও পড়ল।
ওদের মাটি ফেলা দেখে গাধাটি বুঝতে পারল কি ঘটতে চলেছে, প্রাণীটি ভয়ে-দুঃখে নিরবে কাঁদতে লাগল।
কিছুক্ষণ মাটি ফেলার পরে সবাই হঠাৎ চমকে গেল, কারণ গাধাটি অদ্ভুত একটা কাণ্ড করে বসেছে। সবাই যখন গাধার উপরে মাটি ফেলছে, গাধাটি তখন গা-ঝাড়া দিয়ে মাটি নিচে ফেলে দিচ্ছে এবং এক-পা, এক- পা করে ভরাট হওয়া জায়গাতে অবস্থান নিচ্ছে। 

সবাই এবার দ্রুত গাধার উপরে মাটি ফেলতে শুরু করল, গাধাটিও তত দ্রুত মাটি গায়ের ওপর থেকে ঝেড়েফেলে ভরাট হওয়া জায়গাতে এসে দাঁড়ায়।
এভাবে কিছুক্ষণ মাটি ফেলার পর সবাই অবাক হয়ে লক্ষ্য করল কুয়াটি প্রায় ভর্তি হয়ে গেছে, অবশেষে গাধা কুয়া থেকে বেরিয়ে আসলো।…......

জীবনে চলার পথে এমন অসংখ্য কুয়াতে আপনি পড়বেন, যা থেকে উঠে আসার মতো সক্ষমতা হয়তো আপনার থাকবে না। আশপাশের মানুষগুলো আপনাকে টেনে তোলার পরিবর্তে আপনাকে আরো ডুবিয়ে দিতে চাইবে।
কিন্তু এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে আপনাকে ওই গাধা টির মতই গা-থেকে আবর্জনাগুলো একটু একটুকরে ঝাড়া দিয়ে ফেলতে হবে যতক্ষণ না ওই আবর্জনাতে কুয়াটা পূর্ণ হয়ে যায়।
যখনই সমস্যা এসে আপনার শরীর এবং মনের উপরে চেপে বসবে, প্রতিবার একটু একটু করে ঝাড়া দিয়ে সরিয়ে দিবেন।
তারপর মাথা উঁচু করে একটু আগে ঝেড়ে ফেলে দেওয়া সমস্যার উপরে গিয়ে দাঁড়াবেন।
প্রতিটি সমস্যা-ই আবর্জনার মতো। আপনি থেমে থাকলে আবর্জনার পাহাড় এসে আপনাকে জীবন্ত কবর দিয়ে দেবে।




কল্পনার প্রেম

সেদিন প্রথমবারের মতো দেখেছিলাম তোমায়।
কলেজের সবুজ বেষ্টনীতে বসেছিলে। 


নীল পরীরা যেভাবে ডানা জাপটে বসে থাকে।
আমি দূর থেকে অপলক নেত্রে তাকিয়ে ছিলাম। 
বসন্তের বাতাসে মৃদু হাসি হাসছিল তোমার চোখগুলো।
আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে ছিলাম।
হয়তো এটাই প্রথম ভালোবাসার ক্ষীন আভা ছিলো।
 দিনের পর দিন কেটে গেল।
কেটে গেল কয়েকমাস....
তোমার সাথে আমি কথা বলার সাহস পাইনি।
একদিন আমার বন্ধু আকাশ এসে একটা মেয়ের ছবি দেখালো,
জিজ্ঞেস করলো মেয়েটাকে চিনিস? যে ছবিটা ছিল তোমারই !
তার প্রশ্নের উত্তরে আমি বললাম চিনি না।
তার মুখ ফসকে তোমার নামটা বের হয়ে এলো।
সেবার-ই প্রথম তোমার নাম জানলাম আমি।
কিছুদিন পর তোমার সাথে খুব ভাল বন্ধুত্ব হলো। 
কিন্তু এই বন্ধুত্বের বন্ধনের চেয়ে আরেকটু কাছের করে পেতে চাইতাম তোমাকে।
 তুমি সবই বুঝতে...
বাধা দিতে আমায়।
একদিন বিকেলে হাঁটতে বের হয়েছিলাম তোমার সাথে। 
তোমাকে প্রতিনিয়ত খুব রাগানোর চেষ্টা করতাম আমি। কিন্তু তুমি কখনই রাগতে না।
দীর্ঘদিন মনে জমিয়ে রাখা ভালোবাসার প্রকাশ ঘটালাম। অর্থাৎ প্রপোজ করলাম তোমায়।
তুমি বলেছিলে আমার বিয়ের উপযুক্ত সময় হওয়ার আগেই তোমার বিয়ে হয়ে যাবে।
আমি বলেছিলাম তিনটি বছর অন্তত অপেক্ষা করো।
তুমি বললে তা কখনও হয় কী?
এভাবেই প্রতিটা বিকেল কাটতো ভবিষ্যতের কাল্পনিক আঁকিবুকি নিয়ে।
একদিন হঠাৎ তুমি আমার সাথে সব যোগাযোগ বন্ধ করে দিলে।
তার ঠিক চারদিন পর তুমি আমাকে বললে, তোমাকে ভুলে যেতে।
কিন্তু তা আমার পক্ষে সম্ভব ছিলো না। 
এর কয়েকদিন পর জানলাম তোমার বিয়ে হয়ে গেছে।
সবকিছু খুব কম সময়ের মধ্যেই যেনো শেষ হয়ে গেলো...
তোমার মুখের শেষ বাক্য টা ছিলো ভালো থেকো। 
আমিও বারবার বলে যাচ্ছিলাম তুমিও ভালো থেকো।
তুমি ভালো থাকলেই আমি ভালো থাকবো।
আমার সুখ, স্মৃতি, ভলোবাসা সবকিছু ভালো থাকবে।
তুমি তখনও বোঝনি কতটা ভালোবাসতাম তোমাকে। সত্যিই বোঝনি।
আমার হৃদয়ের রক্তে ভেজা চিঠিটা তোমার পায়ে ফেলে চলে গেলাম দূরে... বহুদুরে।
ভালো থেকো তুমি.........

-(সম্পুর্ণ কাল্পনিক) - 
#অচিনপুরের_আইয়ুব

বি।দ্রঃ- গল্পটি কাল্পনিক আকারে সাজিয়েছেন অচিকীর্ষু লৌকিক।।

বুধবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

অসতর্কতার পরিণাম

অসতর্কতার পরিণাম

                                                                               -Rayhan Ahmed




সাগর বাবুগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির এক মেধাবী ছাত্র।
ছোট থেকেই ছেলেটা একটু ডানপিঠে স্বভাবের।
সে ক্লাসে খুব ভালো হলেও ধরাবাঁধা নিয়মনীতি মানতে নারাজ।
পড়াশোনায় অন্যদের তুলনায় ভালো হলেও শৃঙ্খলাবিধি না মানার দায়ে প্রায়ই
মকবুল স্যারের কানটানি খেতো।
.
একদা সে লেখাপড়ার প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম কেনার জন্য শহরে যায়।
সে মূলত গ্রামের ছেলে।
গ্রাম থেকে শহর প্রায় ৮ কি.মি দূরে।
সে বাস যোগে করিমগঞ্জ বাস স্টান্ডে পোঁছে।
স্টান্ড থেকে ঠিক বিপরীত পথে লাইব্রেরি বাজার।
সেখান থেকে মিনিট পাঁচেকের পথ।
প্রায় ১০০ গজ দূরে ওভারব্রীজ। ওভারব্রীজ পেরিয়ে ১ টু বামদিকে গেলেই লাইব্রেরী বাজার।
সে ভাবলো ওভারব্রীজ পার হওয়া টা ঝামেলার। তাই  রাস্তার মাঝ  দিয়ে পার হওয়ার পরিকল্পনা করলো।
রাস্তায় জানজট ছিলো প্রচুর।
কিন্তু সে তবুও রাস্তা পার হবেই। তখন ১টু জানজট কমেছে।
রাস্তা বেশ ফাঁকাফাঁকা।
সে ভাবলো এটাই রাস্তা পার হবার উপযুক্ত সময়।
সে দিলো এক দৌড়। আর মাত্র ২/৩ ধাপ দিলেই সে পেরিয়ে যাবে।
রাস্তার ওপাশ থেকে তীব্র গতিতে ছুটে আসছিল এক মোটর সাইকেল।
.
মুহুর্তেই ঘটে গেল #অনাকাঙ্খিত ঘটনা।
মোটরসাইকেল টা একপাশ থেকে সাগরকে চাপা দিলো।
দৌড় মূখী থাকার কারণে সাগরের পায়ে আঘাত লাগলো।
সে রাস্তায় মুখ থুবড়ে পড়ে গেলো। সাথে বিকট আকারের চিৎকার করলো।
চিৎকার শুনে এগিয়ে আসলো পথচারীরা।
.
তারা দেখলো সাগরের পা থেকে রক্ত ঝরছে।
এমতাবস্থায় তারা সাগরকে  সিএনজি যোগে করিমগঞ্জ সদর হাসপাতালে
পৌঁছায়।
তাকে জরুরী বিভাগে ভর্তি করানো হয়।
ডাক্তারের রিপোর্ট অনুযায়ী জানা যায়  সাগরের ডান পা ভেঙে গেছে।
আর সেই সাথে বাম পা আঘাতপ্রাপ্ত  হয়েছে।
জরুরি বিভাগ থেকে সামান্য ব্যান্ডেজ করে দিয়ে সাগরকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠায়।
সেখানে তার চিকিৎসা চলে।
.
প্রায় ২ মাস পরে সাগর বাড়ি ফিরে।
সে বাড়ি ফিরলেও  সাথে বাড়ি ফিরেনি তার ডান পা।
কারণ, সেই পা কেটে ডাক্তার কৃত্রিম পা লাগিয়ে দিয়েছিল।
আজ সাগর নামের সেই ছেলেটি পঙ্গু।
সে পারে না নিজের মতো করে চলাফেরা করতে।
স্কুলে যাওয়ার সৌভাগ্য হয় না তার।
আর খায় না মকবুল স্যারের কানটানি।
বন্ধুদের সাথে আর বিকালের অলস সময়ে খেলা-ধুলার সুযোগ হয় না তার।
.
আজ সে অসহায়।ক্রমশ কুয়াশাচ্ছন্ন হয়ে উঠলো তার রঙ্গিন ভবিষ্যৎ।  সে আজ শুধুই দুশ্চিন্তাগ্রস্থ।
যা তার সামান্য অসতর্কতার জন্যই হয়েছে।
সে আজ অনুতপ্ত।
আজ সে বারবার বলছে কেন সে ওভারব্রীজ ব্যাবহার করলো না!!
কেন সে নীয়মনীতি মানতে নারাজ ছিলো!!!
এসব চিন্তা করতে করতে সে মানষিকভাবে মৃত্যুর দিকে ধাবিত হতে থাকে।
.
সুতরাং আসুন আমরা শৃংখলাবিধি মেনে চলার চেস্টা করি।
সকল কাজেই ধৈর্যের পরিচয় দেই।
যেন আমার/আপনার জীবনেও সাগরের মত অনাকাঙ্খিত কিছু না ঘটে যায়।
.
আবারোও বলছি সকলেই সচেতন থাকবেন।
স্মরণ রাখবেন যেঃ- "একটা দূর্ঘটনা সারা জীবনের কান্না।"
অবশেষে সকলের সুস্বাস্থ এবং উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করে বিদায় নিচ্ছি।
আল্লাহ হাফেজ।




সমাপ্ত