Cute Orange Flying Butterfly 2017-10-22 ~ ‎অচিনপুরের আইয়ুব‬
আস-সালামু আলাইকুম। আমি আইয়ুব আনসারি। আমার লেখাগুলো পড়তে প্রত্যহ ব্লগটি ভিজিট করুন

বৃহস্পতিবার, ২ নভেম্বর, ২০১৭

শিশুর কপালে টিপ পড়ানো, তাবিজ, সুতো ইত্যাদি বাঁধা বৈধ কি-না?





আসসালামু আলাইকুম। সম্মানিত পাঠকবৃন্দ, কেমন আছেন সবাই?
আমি আপনাদের দোয়ায় আলহামদুলিল্লাহ ভাল আছি।
আজ আমি আপনাদের একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে অবগত করতে আসলাম।
শিরোনাম দেখে অবশ্যই বুঝে উঠেছেন। জ্বী, আমি শিশুর কপালে টিপ পড়ানোর কথা বলতে চাচ্ছি।

আমাদের মা বোনেরা শয়তান ( জ্বীন এবং মানুষ ) এর কু দৃষ্টি থেকে বাঁচানোর জন্য এই পদ্ধতি অবলম্বন করে থাকেন।
আমরা প্রথমেই এর সত্যতা যাচাই করবো এবং তারপর এর বৈধতা / অবৈধতা নিয়ে আলোচনা করবো ইনশাআল্লাহ।


সত্যতা যাচাইঃ-

বদনজর বাস্তব সত্য। বদ নজর দু প্রকারে আবির্ভূত হতে পারে।

১। মানুষের মাধ্যমে ও
২। জ্বীনের মাধ্যমে।


মানুষের ঈর্ষাদৃষ্টি অনেক ভয়াবহ। যদি কারো উপর বদনজর পড়ে তবে তার ফলাফল খুবই ভয়ানক হয়ে থাকে।
আর শিশুদের উপর এই বদ নজরের পরিমান টা বেশিই পড়ে।
অপরদিকে আরেক উপায় হচ্ছে জ্বীনের বদ নজর।
যদি কারো উপর জ্বীনের বদনজর পড়ে তাহলে তার বিপদাপদ যেন হাতের কাছে এসে যায়।
জ্বীনদের বদনজর অনেক প্রখর।

এই ধরণের বদনজর থেকে আমাদের বাঁচাটা জরুরি।
বদনজরের সত্যতা দিতে গিয়ে রাসূল সাঃ বলছেনঃ-

নযর বাস্তব সত্য। যদি কোনো কিছু তাকদীর লঙঘন করতে পারত তবে নযর তাকদীর উল্টাতে পারত"

★ মুসলিম (৩৯-কিতাবুস সালাম, ৩৫- তাহরীমিল কাহানাহ) ৪/১৭৫১ (ভারতীয় ২/২২০)।




অর্থাৎ এ থেকে ছোট বড় সবারই বেঁচে থাকা উচিত।

তবে এই ভয়াবহ কু নজর থেকে বাঁচার উপায় কি???

ইসলাম পরিপূর্ণ জীবন বিধান। পৃথিবীতে এমন কোন সমস্যা নেই, যার সমাধান ক্বোরআন আর সুন্নাহের মাঝে নেই।
এ থেকে বাঁচার পথ উন্মুক্ত। কিন্তু, আমরা যে পথ বেছে নিয়েছি তাও শয়তানেরই শিখানো।
সচরাচর আমরা টিপ, তাবিজ, সুতো, গাছের ডাল ইত্যাদি শিশুর শরীরে বেঁধে দিই।
যা শিরকের অন্তর্ভুক্ত।
তাবিজ বা ঝুলানো কিছু ব্যবহার করা ভয়াবহ শির্ক। যা আমরা পূর্বে আলোচনা করেছিলাম এসো আল্লাহর পথে ব্লগে।
এবার প্রশ্ন তো একটা এসেই যায়। তা হলো, তাবিজ সুতো আর টিপ সহ অন্যান্য সরঞ্জামাদি যদি ব্যবহার করা নিষিদ্ধ হয় তবে এর থেকে বাঁচবো কিভাবে????

সম্মানিত পাঠক, আমি পূর্বেই বলেছি এর সমাধান আমরা কোরআন আর সুন্নাহ থেকে খুঁজে নেবো।

বদনজর থেকে রোগীকে বাঁচাতে রাসূল সাঃ আমাদের কিছু দোয়া শিখিয়েছেন।
তন্মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী দোয়া টি আমরা উল্লেখ করছি।
এ দোয়া পড়ার মাধ্যমে আমরা বদ নজর সহ সকল ক্ষরিকারক প্রাণির হাত থেকে আল্লাহর ইচ্ছায় রক্ষা পাবো।


দোয়া টি হচ্ছেঃ-

আঊযু বিকালিমা-তিল্লা-হিত তা-ম্মাতি মিন কুল্লি শাইতানিও ওয়া হা-ম্মাহ, ওয়া মিন কুল্লি আইনিল লা-ম্মাহ। ( নিজের ক্ষেত্রে)

উইযুকুম বিকালিমা-তিল্লা-হিত তা-ম্মাতি মিন কুল্লি শাইতানিও ওয়া হা-ম্মাহ, ওয়া মিন কুল্লি আইনিল লা-ম্মাহ। ( একাধিক জনের ক্ষেত্রে। )

উচ্চারণ করতে অসুবিধে হলে আপনি এখান থেকে শুনে নিতে পারেন।

দোয়াটির অর্থ :-
আমি আশ্রয় গ্রহণ করছি আল্লাহর পরিপূর্ণ কথাসমূহের, সকল শয়তান থেকে সকল ক্ষতিকারক পোকামাকড় ও প্রাণি থেকে এবং সকল ক্ষতিকারক দৃষ্টি থেকে।

স্বয়ং রাসূল সাঃ তার দুই নাতীকে এই দোয়া পড়ে শোনাতেন এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেন।
তিনি বলতেন, ইবরাহীম (আ:) এ বাক্যদ্বারা তার দু সন্তান ইসমাঈল এ ইসহাক (আ:) কে হিফাজাত করতেন।

বুখারী (৬৪-কিতাবুল আম্বিয়া, ১২ বাব- ইয়াযিফফুন) ৩/১২৩৩

সুতরাং,
মুসলিম মা ও বোনদের আহ্বান করবো ইসলামের পথে ফিরতে। শির্ক এর পথে না চলতে।
আসুন, আমরা শয়তানের পথ ছেড়ে আল্লাহর দেখানো পথে চলতে শুরু করি।
তিনি আমাদের সকল বালা মুছিবত থেকে আছান দিবেন ইনশাআল্লাহ।
প্রত্যেক পিতা-মাতার প্রতি উদার্ত আহ্বান জানাচ্ছি এই মর্মে,
আপনারা সকাল সন্ধ্যায় এই দোয়া গুলো পড়ে সন্তানদের শরীরে ফুঁক দিবেন আশাকরি।
আর সেই সাথে তাদের নিরাপত্তা প্রার্থনা করবেন আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছে।
রাহমানুর রাহীম আমাদেরকে তার রহমতের ছায়া তলে আশ্রয় দান করুন।
আমীন।

শনিবার, ২৮ অক্টোবর, ২০১৭

কালো জাদু ও তার প্রতিকার ( ভূমিকা পর্ব )



আসসালামু আলাইকুম। সম্মানীত পাঠকবৃন্দ, কেমন আছেন আপনারা? আমি আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহ রাব্বুল আ’লামীনের কুদরতে আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।
পাঠকবৃন্দ, দীর্ঘদিন ধরে বিশ্রামের পর টনক নড়লো বর্তমান সময়ের সবচেয়ে বড় সমস্যা Black Magic বা কালো জাদু সম্পর্কে।
সময়ের পরিবর্তে এটি এতটাই ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছে যে, সামান্য ঝামেলায় জড়ালেই একে অপরকে ঠেকিয়ে দেওয়ার জন্য সরাসরি এই বস্তুর আশ্রয় গ্রহণ করে থাকে।
বর্তমানে রাস্তার ধারের অর্থাৎ ফুটপাতের বই বিক্রেতার কাছেও জাদু শেখার বই পাওয়া যাচ্ছে।
আর ইউটিউব সহ ব্লগ আর ফোরামেও এই নিয়ে একদল দুষ্কৃতিমনা ব্যক্তি কাজ করে যাচ্ছে।


সময়ের ব্যবধানেই এর প্রচার প্রসার ঘটছে তড়িৎ গতিতে।
এই কালো জাদু কি আজ নতুন কোন জিনিষ??
আর নেই কি এর কোন প্রতিকার??
আজ আমি আপনাদের এর শারয়ী সমাধান দেখাবো।
তারপূর্বে এ ব্যাপারে একটু ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করবো...

কারা জাদু করে?

কিভাবে করে?

যদি কাউকে জাদু করা হয় তবে কি কি ক্ষতি হতে পারে?

জাদুগ্রস্থ হলে তা বোঝার উপায় কি??

এটা ইসলামী শরীয়তে বৈধ কি-না??

এবং

জাদুর শারয়ী প্রতিকার।

এই ৬টি পয়েন্টের উপর সংক্ষেপে আলোচনা করবো ইনশাআল্লাহ
আপনাদের সুবিধার্থে পুরোটা একবারে না লিখে পর্ব আকারে লিখতে যাচ্ছি...!!
আশাকরি আপনারা ধৈর্য সহকারে এই বিষয়ে জ্ঞান অর্জনের চেষ্টা করবেন।
আর তা দ্বারা নিজেদের এবং সমাজের জাদুগ্রস্থ ব্যক্তিদের উপকার করবেন ।।