Cute Orange Flying Butterfly 2016-09-04 ~ ‎অচিনপুরের আইয়ুব‬
আস-সালামু আলাইকুম। আমি আইয়ুব আনসারি। আমার লেখাগুলো পড়তে প্রত্যহ ব্লগটি ভিজিট করুন

বৃহস্পতিবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

ঈদ এলেই আতকে উঠে শিপন!

ঈদ এলেই আতকে উঠে শিপন!

১।ঈদ এলেই শিপনের বুকটা আতকে উঠে।নিজের জন্য নয়,তার বোনদের জন্য।শিপন খুব সচেতন ছেলে।তাই তার চাচাত ফুফাত ও নিজের মিলে ১৫ বোনদের কে প্রতি ঈদে বলে দেয় দিনের বেলা কোথায় যাও যাও সন্ধার পর কেউ বাড়ীর বাইরে থাকবেনা।এ নিয়ে পরিবারের নারীবাদি মানুষের মধ্যে প্রায় ঝগড়া হয়।তারা বলে মেয়েদের ও তো স্বাধীনতা আছে,আছে তাদের মন,তাদের ও তো ঈদে আনন্দ করতে মন চায়,তাদের ও তো ঘুরতে মনচায়।তোমরা ছেলেরা যে ঈদের দিন রাত শেষ করে বাড়ীতে আসো তখন তো কেউ কিছু বলিনা।
শিপন এসব কিছুর বিরধী নয় তবে একটু সচেতনতার জন্য বলে আরকি।কিন্তু কেন কথাটি বলা তা এখনো কাউকে বলেনি।
তবে এবার শিপনদের বাড়ীতে তার অনার্স পড়ুয়া খালাতো বোন এসেছে ঈদ করতে।বরাবরের মত শিপনের ঐ এককথা"সারাদিন কে কোথায় যাও যাও সন্ধার সময় থেকে কেউ যেন বাড়ীর বাইরে না থাকে"।এবার অন্যদের সাথে সেও শিপনের কথার প্রতিবাদ করে।তাদের সবার চেয়ে শিপন বড় আর শিপনের যে অনেক রাগ তা সবাই জানে।এও জানে শিপন যত রাগিই হোকনা কেন ঈদের দিন আর রাখারাগি করবেনা।তার পরও তুলোনামূলক ভাবে ছোট বোনেরা তবুও শিপনের কথার জোড় প্রতিবাদ করেনা,কিন্তু শিপনের খালাত বোনকে প্রতিবাদ করার জন্য উসকে দিচ্ছে।ওদের থেকে উত্সাহ পেয়ে সে শিপনের সাথে তর্ককরে।অনেক জোড়াজুড়ির পর এক সময় শিপন উত্তোজিতহয়ে বলে আমি যে তোদের মানা করি তার তো একটা কারন আছে,নাকি?সবাই বলে উঠে কি সে কারন?আমরা সেটাই শুনতে চাই?এবার শিপন বল্লো তাতো তোমাদের বলা যাবে না!সবাই কৌতহলী হয়ে নাছোড়বান্ধার মত সেই কথা শুনতে চাইলো।তখন প্রায় বিকেল এবার শিপন তাদের বল্লো,এখন তো বিকেল হয়েছে আমাকে দোকানে যেতে হবে।ঠিক আছে আজকে তোমরা যে যার মতকরে ঘুরে বেড়াও।এবার সবাই বল্লো আমরা কেউ ঘুড়তে যাব না আগে তোমার কাহিনী টা শুনবো।
তখন শিপন তাদের বল্লো,আমি এখন দোকানে যাই,তোমরা সকল বোনেরা রাত ১২টা পর্যন্ত জেগে থাকবে,তোদের আমি বলবো।সবাই তখন বল্লো ঠিক আছে।
শিপনের খুব লজ্জা এক কথায় রক্ষনশীল ছেলে।তাই ভাবছে বোনদের কিভাবে সেই লজ্জার কাহিনীর কথা বলা যায়?শিপন ভাবলো ঘটনা তাদের খুলে বলতেই হবে,এদের তো সচেতন করা দরকার।আমি এদের সচেতন না করলে কে এদের সচেতন করবে?শিপন রাত ১২ টায় আগেই বাড়ীতে আসলো।এসে দেখে তার বোনেরা সবাই তার রহস্য শুনার জন্য গভির রাত পর্যন্ত জেগে আছে।শিপন খাওয়াদাওয়া করে বাইড়ে বেড়িয়ে আসলো।সবাই চুপচাপ বসে আছে।শিপন উত্সাহ নিয়ে বল্লো তোদের আজ যে কথা বলতে চাচ্ছি তা লজ্জা জনক।এখানে বলা যাবে না।সবাই আমার ঘরে আসো।প্রায় ১৫/১৬ জন বোন শিপনের ঘরে আসলো।এবার শিপন বল্লো, শোন আমার কথায় কেউ লজ্জাবোধ করবেনা,আমার কথা শুনে কেউ হাসবেনা,কারও কোন কথা থাকলে পরে প্রশ্ন করবে ,ঠিক আছে?সবাই বলো আচ্ছা ঠিক আছে।এবার শিপন র্নিভয়ে র্নিসংকোচনে বলতে শুরু করলো।শিপন যা বলছিল তা এরকম।


২।ঈদের দিন।শিপন বাজারে ছোট্ট একটা দোকান করে।ঈদের নামাজ শেষ করে বাড়ীতে এসে লম্বা একটা ঘুম দেয়।বাজারে যেতে সন্ধায় এক বন্ধু ফোন করে।হাত-মুখ ধুয়ে শিপন বন্ধুটির জন্য অপেক্ষা করতে লাগলো।বন্ধুটি এসে হাজির হলো।দু জনেই গল্প করতে করতে বাজারে যাচ্ছে।তাদের অনুমানিক আধা কিলোমিটার সামনে দুটি মেয়ে হেটে বাজারে যাচ্ছে।সারা রাস্তায় তারা চার জন ছাড়া আর কোন মানুষ নেই।সম্ভবত রমজানের ঈদ হবে,কারন কুরবানির ঈদ হলে এসময় রাস্তায় প্রচুর মানুষজন থাকার কথা,এসময় গ্রামের মানুষরা তাদের আত্বিয় স্বজনের বাড়ীতে গোস্ত বিলি করে।শিপন ও তার বন্ধু মেয়ে দুটিকে ফলো করে।তাদের চিনতে ব্যার্থ চেষ্টা করে।দূরে হওয়ায় কোন ভাবেই চিনতে পারছে না।শিপন ও তার বন্ধু আলোচনা পরিবর্তন করে মেয়ে দুটিকে নিয়ে চিন্তা করছে।তারা বলাবলি করছে,কেন যে মেয়েরা এসময় রাস্তায় বেরহয়।আজকালকার যা ছেলে পেলে,কোন দূর্ঘটনা তো ঘটতে পারে!নিজেদের মধ্যে এইসব আলোচনা করছে।ঠিক এইসমর পাসদিয়ে একটি মটরসাইকেল মনেহয় ৯০কিলোমিটার বেগে সো করে ছুটেগেল,শিপন বলে এরা কেন যে এতো জোড়ে গাড়ীচালায়।বলছে আর সামনে এগিয়ে চলছে,মটরসাইকেল টা মেয়ে দুটির কাছে গিয়ে স্রো করলো!শিপন ভাবলো তাদেরই কেউ হবে মেয়ে দুটি।কিন্তু নাপিছনে বসা ছেলেটি যে কি করলো ,রাস্তার পাসের মেয়েটি জোড়ে একটি চিত্কারদিয়ে একলাফে বিপরিতদিকে ছুটে গিয়ে জোড়ে জোড়ে গালি দিচ্ছে,তখন আর একটি ছেলে নামলো নেমে আন্য মেয়েটির পিছন দিয়ে বুকে হাতদিল,তা শিপন ও তার বন্ধু দেখতেপেল!

আইয়ুব আনসারি
অচিনপুরের আইয়ুব এর ব্লগ



কিন্তু শিপন আর তার বন্ধু কিছু করতে পারলো না।ঘটনা ঘটার সাথে সাথে।ছেলেরা আবার মটরসাইকেলে উঠে ৯০ কিলোমিটার বেগে চলেগেল।একটি মেয়ে তখনো বকা বকি করেই চলছে,হঠাত্ অন্য মেয়েটি পিছন ফিরে আমাদের দেখে কি যে বল্লো সাথেসাথে মেয়েটি বকাবকি বন্ধ করলো।শিপন ও বন্ধু সেটা বুঝতে পারলো।তারা হাটার গতি বাড়িয়ে দিল।লক্ষ মেয়েদের চিনে রাখা।শিপন ও তার বন্ধু যখন মেয়ে দুটি প্রায় কাছাকাছি,তখন শিপন মেয়ে দুটিকে চিনতে পারলো।মেয়ে দুটি শিপনের পাড়াতবোন।শিপন ও তার বন্ধু মেয়ে দুটির সাথে কথা বলছে আর হেটে যাচ্ছে,কিন্তু কেউ ই ঘটনার কথা বল্লোনা।চার জনেই মনেহয় ঘটনা সম্পর্কে কিছু জানেনা বা বুঝতে পারেনি।যাহোক এখন পর্যন্ত কেউ কাউকে সে কথা বলেনি।
এতোক্ষন সব বোনেরা খুব মনোজোগ সহোকারে শিপনের কথা শুনছে।কেউ কোন কথা বল্লো না সবাই মাথা নিচু করে শুনছে।এবার শিপন বল্লো আমি চাইনা আমার কোন বোনের ক্ষেত্রে এই ঘটনাটা ঘটুক।আর যদি ঘটেও থাকে তা শুনতে চাচ্ছি না।আমি মনে করি এ থেকে তোমরা শিক্ষানিবে।
কেউ কোন কথা বল্লোনা।সবাই মাথা নিচু করে শিপনের ঘরথেকে বেড়িয়ে গেল।