Cute Orange Flying Butterfly 2016-11-27 ~ ‎অচিনপুরের আইয়ুব‬
আস-সালামু আলাইকুম। আমি আইয়ুব আনসারি। আমার লেখাগুলো পড়তে প্রত্যহ ব্লগটি ভিজিট করুন

মঙ্গলবার, ২৯ নভেম্বর, ২০১৬

ফিরে দেখা ২৯ নভেম্বর



উনবিংশ শতাব্দীর শেষ দশকের কোন এক দিনের ঘটনা।
দিনটা ছিল রবিবার।
বাংলা অগ্রহায়ন মাসের ১৫ তারিখ।
সময় টা ছিল সুবহে সাদিক। এমন সময় আমাদের বাসায় এক নতুন অতিথির আগমন ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের দেওয়া রিপোর্ট থেকে জানা যায় অতিথি শিশু টা সেই সময় অনেক আকর্ষণীয় ছিল।
দেখতে এতটাই সুন্দর ছিল যে, যাদের সাথে পারিবারিক কলহ, দাঙ্গা লেগে ছিল যুগ যুগ ধরে । যাদের সাথে চলতো না কোন কথাবার্তা। সর্বদা রেষারেষি লেগেই থাকতো তারাও দেখতে এসেছিল।
আর সেই শিশুটি ছিলাম আমি।
জন্মের পর ইসলামিক নিয়ম অনুসারে আমার ডান কানে আযান আর বাম কানে ইকামাত দেওয়া হয়।
দায়িত্বটিও পালন করেছিলেন আমাদের প্রতিপক্ষের এক ভাই।
যার সাথে আমার এখন পর্যন্তও ভালমত কথাবার্তা হয়নি। ( দাঙ্গার ইতি ঘটেনি আজোও)
আযান-ইকামাত দেবার পর আমাকে মধুমুখ করে বরণ করে নেওয়া হয়।
পরিবারে দেখাশোনার জন্য একমাত্র আম্মু ছাড়া কেউই ছিল না বলে আম্মুর সহচার্যেই বেড়ে উঠি।
আম্মুর পাশাপাশি #নাসিমা আপু আমার সাথে সময় কাটাতেন।
তাছাড়াও আমার খালামুনিরা এসে আমার সাথে সময় কাটাতেন।
তবে নাসিমা আপু-ই বেশি সময় দিয়েছেন আমার পেছনে।
যার অবদান অনস্বীকার্য।
আমি ছোটবেলাই এতটাই মোটা ছিলাম যে, সেই কথা আজোও এলাকাবাসী মনে রেখেছে।
সময়ের পরিবর্তে আমি দিনে দিনে অনেকটা চিকন/পাতলা হয়ে গেছি ।

ছোটবেলার অনেক কথাই মনে পড়ে।
সম্ভবত সাড়ে ৩ বছর বয়সে দাদি মারা যায়।
আর ঐদিন বাসায় আব্বু ছিল না।
মৃতের বাড়িতে প্রাপ্তবয়ষ্কদের মাঝে আম্মু একা।
তখন নিশ্চ্যই আম্মুর মাঝে অনেক টেনশন কাজ করছিল।
মৃত দাদির দিকে তাকিয়ে আমি কিছুটা ভয় পেয়েছিলাম।
আম্মু আমা্র অনেক সাহস জাগিয়েছেন সেই সময়।
যেই অদম্য সাহস নিয়ে আজোও নির্ভয়ে পথ চলছি।

আরেকটা কথা মনে পড়ে।
একদিন দুপুরবেলা আমি শুয়ে ছিলাম। একটা তেলাপোকা আমার শরীরের উপর উঠে গেছিলো।
তেলাপোকার পায়ের আঁচড়ে আমি ভয় পেয়ে গেছিলাম।
অনেক জোরে চিৎকার করেছিলাম ।
মুহুর্তেই আম্মু ছুটে আসে আমার কাছে।
তেলাপোকা টা হাত দিয়ে ধরে ছুঁড়ে ফেলে দেয়।
আমি তখন স্বয়ংক্রিয় হেঁসে উঠি।
তেলাপোকার ভয় কেটে যায়।
আমি আজ তেলাপোকা কেন , মানব পোকাকেও ভয় পাই না।
সকল সাহস ঘিরে রয়েছে আম্মুর অবদান।
আমার এমন কোন কাহিনী মনে নেই যে আম্মু আমাকে ভূতের গল্প শুনিয়ে ভয় পাইয়েছেন।
ভয়ঙ্কর কোন গল্পও আম্মু সাহসীকতার সাথে শুনিয়েছেন আমাদেরকে।

আরেকটা মজার কথা মনে পড়ে গেল । যা শেয়ার না করে পারছি না।
ছোটবেলা থেকেই আমি #অলস প্রকৃতির। ঝালযুক্ত কিছু আমি খেতে পারতাম না । এখনোও খুব বেশি ঝালযুক্ত কিছু খেতে পারি না।
তাই মিষ্টি জাতীয় জিনিষই বেশি খেতাম।
কিন্তু মজার ব্যাপার হলো আমি নিজে কিছুই চিবিয়ে খেতাম না ।
অন্য কেউ চিবিয়ে মুখ থেকে বের করে আমার মুখে দিতো আর আমি মজা করে খেতাম।
আম্মু হয়তো মাঝে মাঝে চিবিয়ে দিতো , কিন্তু আমার বড় ভাইয়া Abu Yousuf Ali ই আমাকে সবকিছু চিবিয়ে খাওয়াইতো।
আমি ভাইয়াকে জাঁতাকল হিসেবে ব্যবহার করতাম।
অবশ্য বুদ্ধি হওয়ার পর থেকে আমি কারোও চিবিয়ে দেওয়া জিনিষ খাওয়া তো দূরের কথা স্পর্শ করা জিনিষও খেতাম না।
অবশ্য মেস লাইফে এসে নিয়মটা অটোমেটিক কেটে গেছে।

দেখতে দেখতেই কেটে গেল দেড় যুগ।
যখন ২/৩ মাস পর বাসায় যাই, এলাকাবাসী দেখে বলে আমি নাকি বড় হয়ে গেছি।
কিন্তু আমি এখনোও নিজেকে পিচ্চিদের মতই ভাবি।
মনে হয় ঐতো সেদিনই গ্রামের বন্ধুদের সাথে হাফপ্যান্ট পড়ে কাদায় ফুটবল খেলতাম।
ঐতো সেদিনই প্রাইমারীর ছাত্র ছিলাম।

নিজে এখনোও ছেলে মানুষী ভাব ধরেই রেখেছি।
আমি এখনোও পিচ্চিদের সাথেই বেশি মিশে থাকি।
এতে আমি অপার আনন্দ লাভ করি।
আর হয়তো আমৃত্যু এই ছেলেমানুষি টা থাকবেই।

আজ শত শত মানুষ আমাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
যা আমার কল্পনাতিরিক্ত। প্রযুক্তির কল্যাণে প্রায় ১ হাজার ব্যক্তি আজ আমার জন্মদিনকে ঘিরে আমার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করেছেন।
সকলকে আমি আমার পক্ষ থেকে আন্তরিক অভিনন্দন ও মোবারাকবাদ জানাচ্ছি ।
দোয়া করবেন যেন আগামীর পথ টা নির্বিঘ্নে পাড়ি দিতে পারি।
বাবা-মা সহ এলাকাবাসীর স্বপ্ন পূরণ করতে পারি।
সেই সাথে আল্লাহর একজন ক্ষুদে গোলাম হিসেবে যেন তাঁর পথে অবিচল থাকতে পারি।

ইতিহাসের পাতায় ২৯ নভেম্বরঃ-
১৭৭৫ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে স্যার জেমস জে অদৃশ্য কালি আবিষ্কার করেন।
১৭৯২ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে মার্ক উডের করা সমগ্র কলকাতার নকশা প্রথম প্রকাশ করেন মি. বেইলি।
১৮১২ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে শিক্ষাব্রতী ও সমাজসেবী দানবীর হাজী মুহাম্মদ মহসীন ভারতের হুগলীতে ইন্তেকাল করেন।
১৮৭৪ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে পর্তুগিজ স্নায়ুতত্ত্ববিদ অ্যাগাস মোনেশের জন্ম।
১৮৯৪ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে রুশ ঔপন্যাসিক বোরিসপিলনিয়াকের জন্ম।
১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে ইংল্যান্ডের সারেতে প্রথম মোটরসাইকেল রেস হয়।
১৯১০ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে ট্রাফিক বাতি প্যাটেন্ট হয়।
১৯১৩ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে যুগোস্লাভিয়ায় মার্শাল টিটোর নেতৃত্বে এন্টি ফ্যাসিজম ফ্রন্ট গঠিত হয়।
১৯১৮ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে লিথুয়ানিয়া প্রজাতন্ত্র হিসেবে ঘোষিত।
১৯৩২ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে ফ্রান্সের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি জ্যাক শিরাক জন্মগ্রহন করেন ।
১৯৩২ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে ফ্রান্সের চুক্তি হয়।
১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে রসায়নে নোবেলজয়ী [১৯৮৬] তাইওয়ানজাত মার্কিন বিজ্ঞানী লু যুয়ান তেশের জন্ম।
১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে আলবেনিয়া নাৎসি কবল থেকে মুক্ত হয়।
১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে রস-সাহিত্যিক কেদারনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মৃত্যু।
১৯৭৩ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে ওয়েলশ ফুটবলার রায়ান গিগস জন্মগ্রহন করেন ।
১৯৮৭ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে বাংলা ভাষা আন্দোলনের একজন সক্রিয় কর্মী এবং রাজনীতিবিদ মোহাম্মদ তোয়াহা মৃত্যুবরণ করেন ।
১৯৮৮ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে প্রলংকারী ঘূর্নিঝড় ও জলোচ্ছাসে বিধ্বস্ত হয় দক্ষিনাঞ্চলের বিস্তীর্ন জনপদ।
১৯৯৩ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে ভারতের অগ্রগণ্য শিল্পপতি জি আর ডি টাটার মৃত্যু।
১৯৯৬ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে সীমান্ত সমস্যা চীন ভারত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
২০০১ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে বিংশ শতাব্দীর অত্যন্ত প্রতিভাবান জনপ্রিয় গায়ক এবং গিটারিস্ট জর্জ হ্যারিসন মৃত্যুবরণ করেন ।
২০০৪ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত মহিলা আসন বিল-২০০৪ পাস হয়।
২০০৪ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে সাংবাদিক জগলুল আহমেদ চৌধূরীর মৃত্যু।
২০০৫ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে শাহাদত চৌধুরীর মৃত্যুঘটে ।