Cute Orange Flying Butterfly 2016-10-16 ~ ‎অচিনপুরের আইয়ুব‬
আস-সালামু আলাইকুম। আমি আইয়ুব আনসারি। আমার লেখাগুলো পড়তে প্রত্যহ ব্লগটি ভিজিট করুন

শুক্রবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৬

স্বাধীনতা


Ayub Ansary

 
স্বাধীনতা তুমি ধর্ষিতা নারীর গলাকাটা লাশ;
স্বাধীনতা তুমি রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিলের প্রয়াশ।
 
স্বাধীনতা তুমি দূর্নিতির কালো হাত;
স্বাধীনতা তুমি রাজনীতির নামে অযথা রক্তপাত।
 
স্বাধীনতা তুমি নারীর নগ্নদেহ;
স্বাধীনতা তুমি atheist দের কেহ?
 
স্বাধীনতা তুমি চোরের খনি;
স্বাধীনতার নামে ধার্মিক হয়রানি।
 
স্বাধীনতা তুমি বড়ই স্বার্থপর;
স্বাধীনতা তুমি ঘুচাবে না এ অন্ধকার?
 
স্বাধীনতা তুমি দু'নারীর অলংকার;
স্বাধীনতা তুমি বাস্তব রূপে কবে ফিরবে আবার??

আবেগের অনুভূতি

 আবেগের অনুভূতি
                                                                          - আইয়ুব আনসারি(Ayub Ansary)

"আমার বান্ধবী সব কয়টাই প্রেম করে!
আমি একাই সিঙ্গেল।
বয়ফ্রেন্ডকে সময় দিয়ে কূল পায় না, আমাকে ওরা কীভাবে সময় দেবে!
এক কাজ করো তো, আমাকে একটা মনের মতো ছেলে খুঁজে দিও।
আর একা থেকে কী হবে! চুটিয়ে প্রেম করা দরকার এবার।"
এক নাগাড়ে কথাগুলো বলে থামে মেয়েটা। ওই ছাদের শালিক-জোড়ার দিকে অপলক দৃষ্টি ছিল, এবার তাকাল ছেলেটার দিকে।
ছেলেটা বলল, "যো-যো-যোগ্যতা কী লাগবে তার?"
দীর্ঘশ্বাস ফেলে মেয়েটা বলে, "পুরুষ মানুষের আবার যোগ্যতা!
আমার যোগ্য কোনো ছেলে দুনিয়াতে থাকলে কি আর এতদিন একা থাকি? সব ছেলেই এক, ধরে নিয়ে এসো একটা তোমার পছন্দমতো!"
"ন্ না মানে, ওই যে বললে না মনের মতো!"
ছেলেটার কথা শুনে হা হা করে হেসে উঠল মেয়েটা। বলল, "আমার কল্পনার রাজপুত্রের তো খুব বেশি যোগ্যতার দরকার ছিল না।
আমার চাওয়া অল্পই ছিল।
সে আমাকে শুধু খুব করে একটু আগলে রাখুক!"
হাসল বটে, কিন্তু বলতে গিয়ে গলা ধরে এলো তার।
চোখে যেন ভেসে উঠল ভুলতে চাওয়া কোনো স্মৃতি।
তবে পরক্ষণেই সামলে নিয়ে বলল, "তুমি বরং খুব যোগ্য একজনকেই খুঁজে দাও।
ঢাকা শহরের সব রেস্টুরেন্টে খাওয়াবে, ২৪ ঘণ্টার ১৮ ঘণ্টাই ফোন করে কী করি জানতে চাইবে, গিফট কিনে দিবে, সারপ্রাইজ দিয়ে হুলস্থূল করে ফেলবে।
যেই না মনে হবে সে বুঝি আমাকে সত্যি ভালোবাসে, তখনই কোনো এক তুচ্ছ কারণে আমাকে ছুড়ে ফেলে চলে যাবে অন্য কারো কাছে!"
বলতে বলতে আবারও হাসতে থাকে মেয়েটা।
কিছু সময় এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে ছেলেটা। ছাদ থেকে নেমে আসে তারপর।
এরপর অনেকবারই দেখা হলো মেয়েটার সাথে।
কখনো সিঁড়িতে, কখনো বাড়ির দরজায়, কখনো বা রাস্তায়।
প্রতিবারই মেয়ের একই কথা, "কই, ছেলে তো খুঁজে দিলে না!
আর কতকাল একা থাকব, বলো!"
বলেই হা হা করে হেসে ওঠে সে।
সেই বিকেলে দমকা হাওয়া ছিল খুব, মেঘও ছিল আকাশে।
তবু প্রতিদিনের মতোই মেয়েটাকে পাওয়া গেল সেই ছাদে।
ছেলেটা এসে দাঁড়াতেই মেয়ে বলল, "কী মহাশয়, পেলেন আমার জন্য ছেলে? আর কতকাল আশায় রাখবেন?"
ছেলেটি বলল, "অ-অ-অনেক খুঁজেছি। প্ প্রতিদিন রেস্টুরেন্টে নিয়ে যাবে, সা-সা-সারাক্ষণ খোঁজ নেবে, সারপ্রাইজ দেবে অনেক, এ-এমন ছেলের অভাব নেই।"
"তো কোথায় তারা? আর অভাবই যখন নাই, এতদিন কেন লাগছে?"
"লা-লা-লাগছে কারণ, আ-আমি তো তাদের খোঁজ করিনি।
আমি শুধু খুঁজেছি এমন একজনকে যে খুব করে আগলে রাখতে পারে!"
হাসি মুছে যায় মেয়ের মুখ থেকে। অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে সে।

ছেলেটি হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলল , "প্রতিদিন রেস্টুরেন্টে নিয়ে খাওয়ানোর সামর্থ্য আমার নেই, ব্যস্ততার জন্য ১৮ ঘণ্টা খোঁজ করাও সম্ভব না। সারপ্রাইজ আমি দিতে পারি না। ভেতর থেকে আসে না, সামর্থ্যও নেই। আমি বড়জোর দশ টাকার বাদাম কিনে রাস্তার ধারে তোমার পাশে হাঁটতে পারি, বসতে পারি ঘাসের বিছানায়। মাঝেসাঝে লিখতে পারি একটা দুটো চিঠি। কিনে দিতে পারি একটা গোলাপ কিংবা বেলিফুলের মালা।
আর... আর এতদিন ধরে নিজের মাঝেই ডুব দিয়ে খোঁজ করলাম অনেক। পেলামও। আর কিছু না পারি, সুখে-দুঃখে খুব করে আগলে রাখতে পারব তোমাকে। ছেড়ে যাব না কখনো!"
এক মুহূর্ত থামে সে। দেখা হলেই দুরু দুরু বুকে কাঁপতে থাকা ছেলেটি এতগুলো কথা বলে ফেলল, কিন্তু একবারও তোতলালো না এবার।
আবার বলল সে, "বিশ্বাস করো মেয়ে, আমার চেয়ে যোগ্য ছেলে আর একটিও খুঁজে পাইনি আমি তোমার জন্য!"

কতদিন দেখিনি তোমায়



কতদিন দেখিনি তোমায়,
তবু মনে পড়ে তব মুখখানি।
স্মৃতির মুকুরে মম আজ,
তবু ছায়া পড়ে রানী।
কতদিন দেখিনি তোমায়,
কত দিন তুমি নাই কাছে।
তবু হৃদয়ের তৃষা জেগে আছে, ।
প্রিয় যবে দূরে চলে যায়
সে যে আরও প্রিয় হয় জানি।
কতদিন দেখিনি তোমায়
তবু মনে পড়ে তব মুখখানি।
হয়ত তোমার দেশে আজ
এসেছে মাধবী রাতি
তুমি জোছনায় জাগিছো নিশি,
সাথে লয়ে নতুন সাথী হেথা।
মোর দীপ নেভা রাতে,
নিদ নাহি দুটি আঁখি পাতে।
প্রেম সে যে মরিচীকা হায়
এ জীবনে এই শুধু মানি,
কতদিন দেখিনি তোমায়!
তবু মনে পড়ে তব মুখখানি
স্মৃতির মুকুরে মম আজ
তবু ছায়া পড়ে রানী,
কতদিন দেখিনি তোমায় ।।
 

সুখী মানুষ

--- সুখী মানুষ --

                                                                                                       - আইয়ুব আনসারি ( Ayub Ansary )


 তোমরা সকালে ঘুম থেকে উঠে বেড-টি আর ড্রাই কেক না পেয়ে মা অথবা কাজের বুয়াকে বকা দিচ্ছ। আর ওরা সকালে পান্তা ভাত আর কাঁচা মরিচ পেয়েই সুখী। এমনকি ওদের সন্তানেরাও সকালে উঠে নিজ দায়িত্বে খেয়ে নেয়।

 তোমরা ব্র্যান্ডের ব্রাশ আর বিদেশি পেষ্ট ছাড়া দাঁত মাজ না। ওরা নিম গাছের ছোট একটি ডালেই সুখী।

 তোমাদের লাল, নীল, গোলাপী বিভিন্ন রংয়ের বিভিন্ন ডিজাইনের ব্যাগ আছে।
বাজারে সর্বশেষ মডেল আসার ২দিনের ভেতরেই তা তোমাদের কাঁধে উঠে না আসলে মন খারাপ হয়ে যায়।
তোমরা স্কুলে গাড়ি ছাড়া পায়ে হেঁটে যেতে পারনা। আর ওরা কোমরে অথবা বুকে বইগুলো চাপিয়েই বের হয়।
 ওদের স্কুলগুলো দু-তিন কিঃমিঃ দুরে হলেও পায়ে হেঁটে যায়। এভাবেই ওরা সুখী।

 স্কুল ফিরতে চক-বার, চটপটি-ফুচকা, কিটক্যাট-চিপস্ না খেলে তোমাদের চলেই না।
আর ওরা ফিরতি পথে ৩-৫ টাকার বুট বাদামেই খুশি।

 শাওয়ার ছেড়ে তার নিচে দাড়িয়ে বসে তোমরা কল্পনার জগতে হারিয়ে যাও। কাঙ্খিত সাবান-শ্যাম্পু না পেলে মন ভেঙ্গে যায়।
আর ওরা নদী খালে সাঁতরে আনন্দ খুজে পায়।

 রান্নার সময় কল ঘোরাইলেই তোমরা পানি পাও। ফিল্টারের পানিতে হাল্কা গন্ধ পেলেই তোমরা অভিযোগ তোল।
আর ওরা দুর দুরান্ত থেকে খাবার পানি বয়ে নিয়ে আসে যার এক ফোটাও অনেক দামি ওদের কাছে। কই, ওরা কি অসুখী??

 দুপুরের খাবারে তোমরা দুই পদের মাংশ না হলে খেতে পার না। বৈদ্যতিক পাখার বাতাস ছাড়া তোমরা বিশ্রাম কল্পনাই করতে পার না।
অথচ
 ওরা সস্তা লাল ভাত, পুঁটি মাছ আর ডালেই সন্তুষ্ট। খোলা পরিবেশের মৃদু বাতাসেই ওরা তৃপ্ত। কই, ওরা তো সুখী।

৪২" টিভির পর্দায় তোমরা মানুষগুলোকে ছোট দেখতে পাও। ভিডিও গেমে হেরে গিয়ে তোমরা চোখের জল ভাসাও। এর ফাঁকে পপকর্ন চিপস্ চিবাতে থাকো।
আর ওরা বিকেলে বিলে খেলে, ঝিলে ঘুরে অবসর কাটায়। শাঁপলা ফুল আর ডাটাই হয় ওদের খাদ্য। তবুও ওরা সুখী।
 
তোমরা সন্তানের স্কুল থেকে আনার দায়িত্ব একে অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে দাও। চাওয়া পুরণ না হলে মুখ ভার করে থাক।
আর ওরা কোন কাজ  "আমি করি না আমি করি"  বলে টানাটানি করতে থাকে। কোন চাওয়া পাওয়া না নিয়ে বেঁচে থেকেই ওরা সুখী।
 
তোমরা বাস্তবতা বুঝতে চাওনা। তোমরা জীবন থেকে তেমন কিছুই শিখতে পারনি। তোমাদের জীবন ব্যার্থ। আজ তোমাদের ওদের পরিবেশে ছেড়ে দিলে বাঁচতে পারবে না। আর ওদের যদি তোমাদের পরিবেশে ছেড়ে দেওয়া হয়, ওরা দিব্যি বেঁচে থাকবে।

সত্যিই বাস্তবতা বড় কঠিন। 

মৃত্যুর পরের মৃত্যু

মৃত্যুর পরের মৃত্যু
লেখকঃ আইয়ুব আনসারি (Ayub ANsary )
ইয়া বড় গোফ আর ইয়া বড় দেহের লোকটা । গভির রাত্রে কক্ষে এসে সবগুলোকে দেখছে । কারো গলা কাটা, কারো মাথায় গুলি লাগা কারো গলায় যখম আবার কারো দুই হাত কাটা । কি সাহস মাইরি লোকটার।
প্রথমে ঢোকঢোক করে মদ গিলে নিলো । পুরো নেশায় মাতাল ।আমাকে রাখা হয়েছে তিন নাম্বার বাক্সে । আমার গলা নেই। কতবার বললাম আমার গলা কাটিস না ।ওরা শুনলোই না । আমাকে জোড় করে ধরে তিন তিনটা কোপ মেরে গলা নামিয়ে দিল ।আবার আমার মুন্ডূ নিয়ে হাসাহাসিও করলো আর পাশের বনের ঝাড়ে ফেলে দিলো । আমি কিন্তু সব জানি কিন্তু দেশের প্রশাসন আমার মাথাটা খুজেই পেলো না । আমি বুজিনা আমি একটা মৃত হতভাগা মানুষ আমার মাথা কোথায় বুজলাম দেখলাম কিন্তু দেশের আইনের লোক পেলো না কেনো ? তবে কি আইনের চোখ অন্ধ এটা তার প্রমান ?উফ আমার মাথাটা যদি থাক্তো তাহলে আর বাকিদের দেখাতাম দেখ আমি কত সুন্দর ছিলাম । হ্যা আমি বেচে থাকতে মাঝে মাঝে মডেল করতাম বিভিন্ন গানে । সেই ৫ বছর আগের কথা যখন কেউ আমাকে চিন্তো না । ৪ বছর আগে চলচিত্রে ঢুকলাম তারপর এক বছরের ভেতর সুপার হিরো হলাম । গানের মডেল থেকে সিনেমার হিরো । খুব নামধাম ছিলো আমার । বাবা মা কেউ নাই । চেহারা আর অভিনয়ের জোড়ে ঢুকতে পেরেছিলাম এফডিসি তে । নায়ক
মান্না ,সালমান শাহ এরা আমার খুব প্রিয় ছিলো । নায়িকাদের ভেতর শাবনুর আর শাবানা এদের অভিনয় ভালো লাগতো । এখন তো আমি সুপার হিরো হলাম তাই সবাইকে দেখতে পারি কাছে থেকে ।সালমান ভাই আর মান্না বেচে নাই তাই দেখতে পারিনা । আমি একদিন অভিনয় করতে করতে পরিচালক কে কাঁদিয়ে ফেলেছিলাম । আমার অভিনয়ে সবাই ভক্ত।পারিবারিক ভাবে আমার বউ ছিলো । খুব ভালোবাস্তাম ওকে । কিন্তু বুজলোনা । একদিন ঘরে ঢূকলাম আর আমার মাথাটা ঘুরে গেলো যা দেখলাম । আমি বেশিরভাগ সময় শুটীং এ থাকি । বউ কে তেমন একটা সময় দেয়া হয়না । আমি ঘরে ঢুকে দেখি যে আমার বউ কার সাথে যেনো পরোকিয়ায় মেতে উঠেছে । আমি সোফায় বসে পরলাম আর ওদের সব দেখচি পাথর হয়ে । আমার দিকে রুপার চোখ পড়তেই ধাম করে তার উপরের লোকটাকে ফেলে দিলো আর সে আড়াল হলো । আমি একটু রাগি মানুষ তাই ওই লোকটাকে আচ্ছামতো মারলাম । রুপাকেও চড় মারলাম কয়েকটা । লোকটাকে বেড় করে দিলাম । আমি আর কি বলবো । আমার যে অনেক নাম কেউ জানলে আমার আর দাম থাকবেনা । তাই দরজা আটকে রুপাকে আচ্ছামত মারলাম । আমি পাগল হয়ে মারতে থাকলাম । রুপা চিৎকার করে বললো তুমি আমাকে কতটা সময় দাও?? হ্যা?? সারাদিন তো শুধু সিনেমা আর সিনেমা । আমি অবাক হয়ে গেলাম যে সময় পায়না তাই পড়োকিয়া করছে , বাহ রুপা বাহ । খুবি ভালো এই বলে আর কিছু না বলে চলে গেলাম । আজ সারা রাত ড্রিঙ্কস করলাম । মাতাল হয়ে রাত ৩ টায় ঘরে ঢুকলাম । রুপা দরজাটা খুলে দিলো । আমি আমার রুমে গেলাম । রুমে ঢুকতেই আমার মাথায় কারা যেনো কাপড় বেধে দিলো ।আমি কিছি দেখতে পাচ্ছিনা । আমাকে গাড়িতে বসালো । আমি জানি না কোথায় নিয়ে যাচ্ছে । আমাকে নামালো । ১০ জন লোক । আমাকে ঘিরে আছে । আমি কাউকে চিনি না ।শুধু যাকে মেরেছিলাম আজ রাতে তাকেই চিনলাম। কিছুক্ষ্ণ আমাকে মারলো তারপর আমাকে শুয়ালো । একজন আমার গলায় ছুড়ি দিয়ে কুপাচ্ছে আর বলছে এরা সবাই তোর বউয়ের কথায় এসেছে । টাকা দেহ দু টায় পাবো তাই তোকে মারছি আমরা । আমি নির্বাক হয়ে গেলাম যার জন্য এতো টাকা ইঙ্কাম করতাম সে আজ সেই টাকা দিয়ে আমাকে মারাচ্ছে । আমার ঘরের সব টাকা ওড় কাছে থাকতো । আমার দেহো থেকে মাথাটা নামিয়ে নিলো। অসাড় দেহো আমি মাথা দূরে পরে রইলাম । এরপর পুলিশ আমাকে এখানে এনেছে । তিন নাম্বার বাক্সে রেখেছে । আমি বড় নায়ক ছিলাম তাই আমার মৃত্যুতে অনেক তদন্ত করা হবে । বড় দেহের লোকটি নেশা করা শেষে প্রথমে একটা মেয়ের লাশ কাটা শুরু করলো । ডুমুর একটু কু নজরেই তাকালো । আমিও দেখছি মেয়েটাকে কাটা । আমার মাথা নেই কিন্তু এখন চোখ আমার গলাতে । বিধাতার কাছে চাইলাম আর দিলো । মেয়েটিকে আস্তে আস্তে বস্ত্র বিহিন করছে । আর মেয়েটাড় চেহারা খুব সুন্দর । ডুমুর পুরো দেহে হাত দিয়ে দেখছি । কি আজব মাইরি । মৃত্যুর পরও রক্ষা নেই । মেয়েটা ধর্ষিতা হয়েছে । তারপর নিজেই ফাসি নিয়ে মারা গেছে । ডুমুর মেয়েটাকে এপিঠ ওপিঠ করে দেখলো । তারপর পেট হত পা সব কাটলো । এবার আমার পালা , খুব ভয় লাগছে কত করুনভাবে যে কাটবে । আল্লাহ ই জানে । আমার মাথা নেই তাই ডুমুর গালি দিয়ে বললো বোকাকান্দা কে রে তুই?? কাগজে মিলিয়ে দেখলো আমি নায়ক ছিলাম । নাম ও দেখলো । ডুমুর বললো সারাজিবন তো মেলা মাইয়া মানুষ নিয়া মাতামাতি করছো ।এবার বোঝ ?? এই বলে আমার পেটে ছুড়ি চালালো । মাথাটা ফাটছে না তাই হাতুরি দিয়ে ধাম করে মারলো ।উফ কি ব্যাথা গো । আমার সব পরিক্ষা করলো একটা পরিক্ষক এসে । পরের দিন আমাকে কবর দেয়া হলো । তার একদিন পর আমাকে আবার কবর থেকে তুলবে । আমার গলায় কিভাবে কেটেছে তা দেখতে । আমি প্রায় পচে গেছি তবুও তুললো । সবে গুমিয়েছিলাম ।মানুষ কি নিষ্ঠূর ঘুমাতেও দিলো না । আবার সেই ভয়ংকর লোক্টা আর পরিক্ষক । আমাকে তার পরের দিন আবার কবর দেয়া হলো । সেইদিন রাত্রে কবরস্থানে ৫ জন লোক এসে আমার লাশটা চুরি করে নিয়ে গেলো কবর খুড়ে । আমি এখন বুড়ীগঙ্গা নদির জ্বলে । আজ বিকেলটা খুবি বিষন্ন যাচ্ছে আমার । হতাত রুপাকে দেখলাম । কারো বুকে মাথা রেখে নদির ধারে হাওয়া খাচ্ছে ।

একটি লাভজনক ব্যবসা।

একটি লাভজনক ব্যবসা।
- আইয়ুব আনসারি ( Ayub Ansary )
 😊
 মদীনার বাগানগুলোর মধ্যে এক ইয়াতীম ছেলের একটি বাগান
ছিল। তার বাগানের সাথে লাগোয়া বাগানের মালিক ছিলেন
আবু লুবাবা নামের এক লোক। সেই ইয়াতীম ছেলেটি নিজের
বাগান বরাবর একটি প্রাচীর দিতে গিয়ে দেখল, প্রতিবেশীর
একটি খেজুর গাছ সীমানার মধ্যে পড়ে যাচ্ছে। ছেলেটি তার
প্রতিবেশীর কাছে গিয়ে সমস্যার কথা বলে সীমানার খেজুর
গাছটি কিনতে চাইলো যাতে প্রাচীরটি সোজা হয়। কিন্তু
প্রতিবেশী আবু লুবাবা কোনভাবেই রাজী হচ্ছিল না।
কোন উপায় না পেয়ে সেই ইয়াতীম রাসুলুল্লাহ্ ﷺ এর কাছে
গিয়ে পুরো ঘটনা বুঝিয়ে বললো। আল্লাহর রাসুল ﷺ ডেকে
পাঠালেন আবু লুবাবাকে। সে মসজিদে নববীতে আসলে নবী
করীম ﷺ সেই খেজুর গাছটি অর্থের বিনিময়ে হলেও ইয়াতীম
ছেলেটিকে দিয়ে দিতে অনুরোধ করলেন।
.
আবু লুবাবা যথারীতি রাজী হলো না। রাসুলুল্লাহ্ ﷺ এক
পর্যায়ে তাকে বললেন, "তোমার ভাইকে ওই খেজুর গাছটি
দিয়ে দাও। আমি তোমার জন্য জান্নাতে একটি খেজুর গাছের
জিম্মাদার হব।"
বিস্ময়কর হলেও আবু লুবাবা তারপরেও সেই খেজুর গাছ দিতে
রাজী হলো না। রাসুলুল্লাহ্ ﷺ এই পর্যায়ে চুপ হয়ে গেলেন।
এর চেয়ে বেশী তিনি ﷺ তাকে আর কী বলতে পারেন!
উপস্থিত সাহাবীদের মধ্যে সাবিত (রাঃ)ও ছিলেন। তিনি
আবু দাহদাহ নামে পরিচিত ছিলেন। মদীনায় তাঁর খুব সুন্দর
একটি বাগান ছিল। প্রায় ৬০০ খেজুর গাছ ছাড়াও একটি
মনোরম বাড়ি ও একটি পানির কুয়া ছিল সেখানে। মদীনার
সব বড় ব্যবসায়ীদের কাছে আবু দাহদাহ (রাঃ) এর বাগানটি
সুপরিচিত ছিল। তিনি স্বপরিবারে সেখানে বসবাসও করতেন।
.
আবু দাহদাহ (রাঃ) হঠাৎ রাসুলুল্লাহ্ ﷺ -এর কাছে গিয়ে
বললেন, 'হে আল্লাহ্'র রাসুল ﷺ ! আমি যদি আবু লুবাবার
কাছ থেকে ঐ খেজুর গাছটি কিনে এই ইয়াতীমকে দিয়ে দেই,
তাহলে আমিও কি জান্নাতে একটি খেজুর গাছের মালিক
হবো?' রাসুলুল্লাহ্ ﷺ বললেন, "হ্যাঁ, তোমার জন্যও
জান্নাতে খেজুর গাছ থাকবে।" আবু দাহদাহ (রাঃ) সাথে
সাথে আবু লুবাবাকে বললেন, 'আপনি আমার সেই সম্পূর্ণ
বাগানটি গ্রহণ করে সেই খেজুর গাছটি আমাকে দিয়ে দিন।'
.
আবু লুবাবা 'দুনিয়াবী' এই বিনিময় বিশ্বাস করতে পারছিল
না! হুঁশ ফিরলেই সে বলল, 'হ্যাঁ আমি আপনার খেজুর গাছের
বাগানটি গ্রহণ করলাম। বিনিময়ে আমার সেই খেজুর গাছটি
আপনাকে দিয়ে দিলাম।'
হযরত আবু দাহদাহ (রাঃ) সেই মূহুর্তেই খেজুর গাছটি
ইয়াতীম ছেলেটিকে উপহার হিসাবে দিয়ে দিলেন। তারপর
রাসুলুল্লাহ্ ﷺ এর দিকে তাকিয়ে বললেন, 'হে রাসুলুল্লাহ্ ﷺ !
এখন আমি কি জান্নাতে একটি খেজুর গাছের মালিক হলাম'?
রাসুলুল্লাহ্ ﷺ বললেন, "আবু দাহদাহ'র জন্য জান্নাতে এখন
কত বিশাল বিশাল খেজুরের বাগান অপেক্ষা করছে।"
.
বর্ণনাকারী হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, এ কথাটি রাসুলুল্লাহ্
ﷺ এক, দুই বা তিনবার বলেননি; বরং খুশী হয়ে বারবার
বলেছেন।
শেষে আবু দাহদাহ (রাঃ) সেখান থেকে বের হয়ে সদ্য বিক্রি
করে দেয়া সেই বাগানে ফিরে গেলেন। বাড়ির দরজায় এসে
স্ত্রীকে ডাক দিলেন তিনি, 'হে উম্মে দাহদাহ! বাচ্চাদেরকে
নিয়ে এ বাগান থেকে বের হয়ে আসো। আমি দুনিয়ার এই
বাগান বিক্রি করে দিয়েছি'। তাঁর স্ত্রী বললেন, 'আপনি কার
কাছে এটি বিক্রি করেছেন? কে কত দাম দিয়ে এটি কিনে
নিয়েছে?'
.
আবু দাহদাহ (রাঃ) বললেন, 'আমি জান্নাতে একটি খেজুর
বাগানের বিনিময়ে তা বিক্রি করে দিয়েছি'। তাঁর স্ত্রী
বললেন, 'আল্লাহু আকবার! হে আবু দাহদাহ! আপনি অবশ্যই
অত্যন্ত লাভজনক একটি ব্যবসা করেছেন'।
.
[মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১২৫০৪; ইবনে হীব্বান, হাদীস
৭১৫৯; আস-সিলসিলা সাহীহাহ, হাদীস ২৯৬৪; মুস্তাদরাকে
হাকীম, হাদীস ২১৯৪]

আক্ষেপ



ছেলেগুলো আমার বউয়ের কাপড় খুলে নিলো আমি ( ষ্যাঁড় জাফ্রিক বাল) কিছুই করতে পারলাম না।
এ নিয়ে দশ থেকে বারো জন মেসেজে আর কমেন্টে জিজ্ঞাস করলো আমি কেন বদরুলকে সাপোর্ট করি?
আসলেই আমি সত্যি সত্যি সাপোর্ট করি বদরুলকে।
এক মেয়ের পোষ্টে কমেন্ট করলাম ।
সে বলে আমি পাগল, আরও বলে যত্তসব আমি তো বলবো আপনি খাদিজার জন্য মানবতা দেখিয়ে যে পোষ্টটা করেছেন তাতে আপনি পাগলামির করছেন।
.
সেদিন একটা গল্প পড়তেছিলাম তখন লেখক একটা সে রকম উদাহরন দিলো আর সে উদহারণটা ছিল এমনঃ-
এক লোক একটা অফিস খোলে বসলো কাষ্টমার নেই তেমন ।
একটা কাষ্টমার আসতেই তিনি টেলিফোন কানে নিয়ে শুরু করলেন "আরে ভাই বললাম তো চার কোটি টাকার নিচে কাজের টেন্ডার আমি নেই না। সেদিন তো মন্ত্রণালয় থেকে কল করে আমাকে আগামী মাসের ৫ কোটি টাকার কাজটা দিতে চাচ্ছে ।
এটা আমি এখনো ভেবে দেখছি"
.
টেলিফোনটা রেখেই কাষ্টমারকে বললো কি চাই? তখন লোকটা বললো "আপনার টেলিফোনের সংযোগটা দিতে এসেছি।
এতদিন সংযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল কয়েক মাসের বেতন বকেয়া ছিল তাই" আমি হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছিলাম।
আসলে আমাদের অবস্থাগুলাও এমনই ফেসবুকে চাপা মারার মত। কই অনেকদিন তো হলো আপনাদের বোন তনু হত্যার রহস্যই বের করতে পারলেন না।
এত আন্দোলনে কি ফসল হলো আপনাদের?
.
আমি তো তনুর হত্যাকারীদের সমর্থন করি।
যে /তারা হত্যা করে এত আন্দোলনের মধ্যেও বিচার ছাড়াই দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে।
এমন সাহসীদের সমর্থন ছাড়া আমি কি আপনার মত ঘর কোণে বসে ফেবু তে প্রতিবাদ করা ভীতুকে সাপোর্ট করবো?
.
আমি মনে করি বদরুলরাই সেরা ।
তারা দিব্যি বুক ফুলিয়ে আমাদের মত বোকাদের শাসিয়ে যাচ্ছে।
তারা এক বদরুলই যথেষ্ট আমাদের মত শত কোটি বোকাদের ধোকা দিয়ে বোকা বানাতে...
.
ফেবুতে অনেক ইস্যু নিয়ে অনেক প্রতিবাদ দেখছি মাঠের কথা বললে ওনারা নাকে সরিষার তেল দিয়ে ঘুমিয়ে থাকে।
বোকা থাকার চেয়ে চালাক হওয়া অনেক জরুরি।
.
আসুন যুগের সাথে তাল মিলাই।বদরুলদের পাশে দাড়াই।অবশেষে আবারও বলবো বদরুলের মুক্তি কামনা করি।

বিভিষিকাময় জীবন

রাত একটা বাজে। নিঝুম নিস্তব্ধ ৬৪/বি কালিচরণ লেনের ভাড়া বাড়ির বড় খাটটার ওপর অতিশ গভীর ঘুমে মগ্ন। কিন্তু পারমিতার চোখে ঘুম নেই। ধীরে ধীরে পূবের বড় জানালার কাছে এসে দাঁড়ালো পারমিতা। খোলা জানালা দিয়ে নির্নিমেষে চেয়ে রইলো বাইরের আকাশটার দিকে। সন্ধ্যেবেলার জমাট মেঘটা কেটে যাওয়াতে একটা দুটো করে বেশ কিছু তারা এসে ভিড় জমিয়েছে নিকষ কালো আকাশটার বুকে। কোনটা মিটমিট কোনটা বা স্থির হয়ে আলো দিচ্ছে। ৬৪/বি কালিচরণ লেনের এই বাড়িটাতে আসার পর থেকে কবে যে এভাবে আকাশের দিকে চেয়ে তারা দেখেছে মনে করতে পারলো না পারমিতা।

ছোটবেলায় ছাদে বসে বাবার সাথে প্রথম তারা দেখার শুরু। মনে আছে গরমকালে লোডশেডিং হলে বাবা ছোট্ট পারুকে নিয়ে ছাদে এসে বসতেন। আঙ্গুল দিয়ে দিয়ে তারা চেনাতেন, “ওই দেখ ধ্রুবতারা, ওই লালচে রঙের তারাটা হল মঙ্গলগ্রহ আর সাদা ঝকঝকে উজ্জ্বল যে তারাটা দেখছিস, ওটা হল বৃহস্পতি। আকাশের ওই তারাদের ভিড়ে মিশে আছেন তোর ঠাকুরমা, তোর মা। ওইখান থেকে ওঁনারা আমাদের দেখছেন, আমাদের কথা শুনছেন”।

চোখের কোনটা ভিজে উঠলো পারমিতার! অনেকদিন পর মা-বাবার কথা খুব মনে পড়ছে! খোলা জানালা দিয়ে আকাশের বুকে তারাদের ভিড়ে কেবলি তাঁদের খুঁজে বেড়াচ্ছে! মা সেই কোন ছোটবেলায় আকাশে চলে গেছেন! বাবার কাছেই বেড়ে ওঠা। আর সব মেয়েদের মত মায়ের সঙ্গ পায়নি বলে ছোট থেকেই পারমিতা একটু ভীতু, মুখচোরা, প্রতিবাদ না করে মানিয়ে চলা গোছের মেয়ে। বাবা মেয়েকে যথেষ্ট আগলে রেখেছেন, তবুও মায়ের স্থান তো নিতে পারেন নি। মেয়েলী সমস্যার সমাধানে মায়ের সাহায্য থেকে বঞ্চিত পারমিতা একটু বেশিই নিজেকে গুটিয়ে রাখে।

যদিও আজ বেশি করে বাবার কথাই মনে পড়ছে! এতদিনে সে বুঝে গেছে গুরুজনেরা যা বলেন বা করেন, সবটাই সন্তানের ভালোর জন্য। বাবা প্রথম যেদিন অতিশকে দেখেছিলেন সেদিনই প্রবল আপত্তি করেছিলেন। কিন্তু পারমিতা তখন অতিশের প্রেমে এতটাই উন্মত্ত যে বাবার আপত্তির কথা ভাল তো লাগেইনি বরং যে বাবা পারমিতার জন্য দ্বিতীয় বিয়ে না করে ছোট্ট মেয়েটাকে আঁকড়ে এতদিন বেঁচেছিলেন, সেই বাবাকে নিজের চরম শত্রু বলে মনে করেছিল। আর তারপর একদিন বাবাকে না জানিয়ে মাত্র চার মাসের প্রেমিক অতিশের চাপে কলেজ থেকে বাড়ি না ফিরে, নদীর ধারের কালী মন্দিরে কোনোরকমে বিয়েটা সেরে সোজা এসে উঠেছিল ৬৪/বি কালিচরণ লেনের অতিশের ছোট্ট এই ভাড়া বাড়িতে।

তখন অতিশ একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী ছিল। পারমিতা সবে কলেজের প্রথম বর্ষ। পরবর্তীতে অতিশ বিভাগীয় পরীক্ষা দিয়ে তৃতীয় শ্রেণির কর্মীতে প্রোমোশন পায়। কিন্তু পারমিতা আর পড়াশুনা করেনি। এদিকে এভাবে বিয়ে করার জন্য বাবার সাথে অনেকদিন যোগাযোগ ছিল না ওদের। তারপর অভিমান করে থাকতে না পেরে এক বিকেলে স্নেহ বৎসল বাবা নিজেই এসেছিলেন একমাত্র মেয়ের বাড়িতে। তারপর থেকে আসা যাওয়া শুরু হলেও অতিশ কোনোদিন পারমিতার বাবাকে ভাল চোখে দেখেনি। পারমিতাকেও বাবার বাড়ি যেতে দিত না। যদিও ঘরের বাইরের লোকের কাছে অতিশ খুব নম্র ভদ্র ছেলে হিসেবে পরিচিত! মাথা নিচু করে পথ চলে। কারো সাথে কোন ঝামেলায় নেই ।স্ত্রী ছাড়া কোন মহিলার দিকে চোখ তুলে চায় না।

তা প্রথম দিকে পারমিতাও স্বামীর চাকরি, স্বভাব নিয়ে খুব অহংকার করতো। বিশেষ করে নিজের স্ত্রী ছাড়া কোন মহিলার দিকে চোখ তুলে চায় না, বাড়িতে ফিরেই স্ত্রীকে নিয়ে আদরে মেতে ওঠে। সে স্বামীর ঘরণী মানে স্বামী সোহাগিনী! আর কোন মেয়েই বা স্বামী সোহাগিনী হতে চায় না! কিন্তু ধীরে ধীরে অতিশের দিনের বেলার নম্র ভদ্র রুপটা সরেগিয়ে রাতের অন্ধকারে বন্ধ ঘরের ভেতর একটা জানোয়ারের রুপ নিতে শুরু করলো! অতিশেরভালোবাসা ভয়ঙ্কর রকমের বিকৃত যৌন অত্যাচারে পরিণত হল। স্ত্রীর ইচ্ছে থাকুক বা না থাকুক,শরীর ভাল আছে কি না আছে, কোন কিছুকেই আমল না দিয়ে যখন তখন জোর-জবরদস্তিচলতো। বিভিন্ন ধরনের বিকৃত উত্তেজক ছবি দেখা আর স্ত্রীর ওপর তা প্রয়োগ করাটা এক নেশায়পরিণত হল! অতিশের বিকৃত ইচ্ছের বিরুদ্ধে কোনরকম আপত্তি করলেই ভয়ঙ্কর ক্রুদ্ধ হয়ে উঠতো।একে তো স্বেচ্ছায় বাবার বাড়ি ছেড়ে এসেছে অতিশের কাছে, তায় আবার লেখাপড়া ও উচ্চমাধ্যমিকে ইতি টেনেছে। কি যে করবে পারমিতা বুঝে উঠত না!  ভোর হলেই অতিশ ভালমানুষ হয়ে যায়! তখন পারমিতা কান্নাকাটি করে, বোঝায় অতিশকে, কিন্তু কোন পরিবর্তন নেই!রাত হলে আবার সেই হিংস্র জানোয়ারের রূপ নেয়।

বাবাকে তো আর এসব কথা বলা যায় না! তবুও একদিন আভাষে ইঙ্গিতে মানসিক অশান্তির কথা জানালে বাবা বলেছিলেন “একদম যদি মানিয়ে নিতে না পারিসতবে চলে আয় না আমার কাছে । পড়াশুনাটা আবার শুরু কর,আমি বেঁচে থাকতেই দেখ যদি নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারিস”। কিন্তু চলে আসতে পারে নি পারমিতা।বাবার কাছে পাকাপাকি ভাবে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতেই আচমকা একদিন স্ট্রোক হয়ে বাবা পৃথিবী ছেড়ে চলে যান!উচ্চমাধ্যমিক পাশ পারমিতার তিন কূলে আর আপন বলতে কেউ রইল না। অগত্যা বাধ্য হয়েই স্বামীর ঘরে মুখ গুঁজে থাকা। কিন্তু পারমিতা অতিশকে ত্যাগ করে বাবার বাড়ি ফিরে যাওয়ারসিদ্ধান্ত নিয়েছিল, এই কারণে অতিশ দিনে দিনে অতিশয় ক্রুদ্ধ হয়ে পারমিতার ওপর বিকৃত অত্যাচারের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয়!

মুখচোরা অন্তর্মুখী চরিত্রের পারমিতা কাকে বলবে এসব কথা?মাঝে মাঝে ভাবতো, ঘর ছেড়ে বেরিয়ে যাবে! কিন্তু কোথায়, কার কাছে যাবে? কাকেই বা বলবে এসব কথা? যদি অতিশের কানে ওঠে তবে হয় অত্যাচার করে মেরে ফেলবে, নয় বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেবে! তখন কি করবে সে? তবুও একদিন সাহস সঞ্চয় করে তার চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ বয়সীবড় ননদকে অতিশের বিকৃত যৌন অত্যাচারের কথা জানায়। শুনে বড় ননদ অবাক হয়ে বলেছিল,
 “আমার হীরের টুকরো ভাইয়ের সম্পর্কে এসব কি বলছ তুমি? ওকত ভাল ছেলে তা তুমি জানো? ছেলেদের একটু আধটু অমন শারীরিক চাহিদা থাকে! স্ত্রীদের কর্তব্য তা পূরণ করা! তোমার জামাইবাবুরও আছে! আমি নিঃশব্দে তা পূরণ করি। আমি কি ঘরেরবাইরে সে সব কথা পাঁচ কান করতে গেছি? শুনেছো কোনোদিন? আর তুমি কিনা এসেছো তোমাদের চার দেওয়ালের ভেতরের কথা আমাকে জানাতে? ভাইয়ের কথামত চললেই তো পারো!কি গুণ আছে তোমার শুনি? ওই তো একটু রূপ! তাও তো আমার ভাই বউঅন্তঃপ্রাণ! অন্যমহিলার দিকে চোখ তুলেও চায় না! ভাই যদি তোমাকে ছেড়ে অন্য মেয়ের কাছে রাত কাটাতো তোমার ভাল লাগতো?”

পারমিতা ভয়ে আর কথা বাড়ায় না! যদি অতিশের কানে ওঠে!নইলে ননদের কাছে খুব জানতে ইচ্ছে করছিল, “সঙ্গমের সময় জামাইবাবুও কি বড়দির স্তন দুটোশক্ত দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখে? সিরিঞ্জ দিয়ে গরম জল জোর করে যৌনাঙ্গে প্রবেশ করায়? শরীরের গোপন জায়গায় সিগারেটের ছ্যাঁকা দেয়? স্ত্রীর মুখে রেতঃপাত করে? বাবার মৃত্যুর পর চারদিনের কালাশৌচের মধ্যেও একজন পিতৃহারা কন্যাকে শোক করার সময়টুকু দেয় না যে স্বামী, তাঁকে কিভাবে মানুষ বলবে পারমিতা? চোখের জল মুছে ফিরে এসেছিল ননদের বাড়ি থেকে। তাই আজখুব মনে পড়ছে বাবার কথা! বাবার ইচ্ছেমত যদি লেখাপড়া মন দিয়ে করতো, তবে এদিন আজদেখতে হত না!

তাও যদি একটা সন্তান হত ওদের, তাহলে হয়তো কিছুটা পাল্টাতো অতিশ! কিন্তু ভগবানের কি যে মহিমা কে জানে! আট বছর হল বিয়ে হয়েছে, একটি সন্তানও আসেনি পারমিতার গর্ভে। অথচ দিন দিন অতিশের অত্যাচার বেড়েছে। আজকাল বাইরেরকারো সাথে সেভাবে মিশতে দেয় না। অফিস যাওয়ার সময় পারমিতাকে ঘরে তালা বন্ধ করে যায়।পারমিতাও ভয়ে কাউকে কিছু বলে না। স্বল্প শিক্ষিতা পারমিতা মহিলা কমিশনের নাম শোনেনি কখনো!

আজ সন্ধ্যেবেলা, হ্যাঁ, যে অতিশ বাইরের কারো সাথে পারমিতাকে মিশতে দেয় না, সে অতিশ সন্ধ্যেবেলা সাথে করে একজন অপরিচিতকে নিয়েএসেছিল। লোকটার চোখ দুটো যেন কেমন! বাইরে থেকে অনেক রকম খাবার কিনে এনেছিলঅতিশ। সেসব খাবার পারমিতাকে পরিবেশন করতে বলে। পারমিতা খাবার পরিবেশন করে দিয়েবেডরুমে চলে আসে। কিছুক্ষণ পর অতিশ এসে পারমিতাকে ড্রইং রুমে যেতে নির্দেশ দেয়। আরসঙ্গে এও বলে, “ইনি নাকি অফিসের বস। এনাকে একটু খুশি করতে হবে। বেশি কিছু না, একটুহেসে কথা বলা, অথবা উনি হাত টাত ধরলেও ধরতে পারেন। যদি শুতে চায়, পারমিতা যেন হেসেরাজি হয়! তাহলেই নাকি নতুন ফ্ল্যাটের জন্য অফিস থেকে অতিশ একটা বড় মাপের লোন পাবে”।

অতিশের কথাটা শুনে পারমিতা স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিল! দিনের পর দিন নিজে শারীরিক মানসিক অত্যাচার করেও ক্ষান্ত হয় নি! আজ আবার বাইরের লোকের কাছে নিজের স্ত্রীকে পাঠাতে চাইছে!! আজ এই লোকটিকে মেনে নিলে কাল আবার যে অন্যকাউকে বাড়ি আনবে না তার কোন গ্যারান্টি নেই! আর তাই এই প্রথম আজ তীব্র প্রতিবাদকরেছিল পারমিতা! কিন্তু সে প্রতিবাদের মাসুল দিতে হয়েছিল চরম ভাবে। অপরিচিত সেই লোকটা অধস্তন কর্মচারীর সুন্দরী বৌকে হাতে না পেয়ে বিরক্ত হয়ে অতিশকে গালাগাল দিয়ে চলেগিয়েছিল। আর তারপর ঘরের দরজা জানালা বন্ধ করে, অবাধ্য স্ত্রীর মুখ বেঁধে, বেল্ট দিয়ে নিষ্ঠুরভাবে মেরেছিল অতিশ। সারা শরীরে চাকা চাকা কালশিটে করে দিয়েছে! তারপর নিজে ক্লান্ত হয়ে হাঁপাতে শুরু করে। প্রবল শ্বাসের সমস্যা শুরু হয় অতিশের!

কিছুদিন ধরেই অতিশ শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভুগছে। সকালসন্ধ্যায় নিয়ম করে ইনহেলার নিতে হচ্ছে। আজ সন্ধ্যের ইনহেলার সময় মত নেওয়া হয়ে ওঠেনি।অতিশ হাঁপাতে হাঁপাতে বিছানায় বসে পড়ে। টেনে টেনে শ্বাস নিতে নিতে পারমিতাকে আদেশ করেইনহেলারটা পাশের ঘর থেকে এনে দেওয়ার জন্য। পারমিতা যন্ত্রণায় কুঁকড়ে যাওয়া শরীরটাকেকোনোরকমে টেনে নিয়ে গিয়েছিল পাশের ঘরে, যেখানে টেবিলের ওপর অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসের সাথে ইনহেলার রাখা ছিল। কিন্তু হঠাৎ কি যে বুদ্ধি হল পারমিতার! প্রচণ্ড আক্রোশে অতীশকে একটু শাস্তি দিতে চট করে ইনহেলারটা লুকিয়ে ফেলল। আর পুরনো খালি একটা ইনহেলার এনে এগিয়ে দিল অতীশের দিকে। অতীশ কোন প্রশ্ন না করেই সেটা নিয়ে প্রাণপণে পাফ নিতে লাগল। কিন্তু ফাঁকা ইনহেলারে কিছুই হল না। শ্বাসকষ্ট বেড়েই চলল। চোখ ঠেলে বেরিয়ে আসতে লাগল! মুখের শিরা উপশিরা ফুলে উঠলো অতিশের!

এখন বিছানায় শান্ত হয়ে ঘুমিয়ে আছে অতিশ। ভোরের আলো এসে সারা ঘরে ছড়িয়ে পড়েছে পূবের খোলা জানালা দিয়ে। অনেক দিন বাদে আজ এই ভোরেরআলোটা খুব সুন্দর আর মিষ্টি লাগছে! পারমিতা জানালার কাছ থেকে সরে এলো। বিছানার একপাশ থেকে অতিশের মোবাইলটা তুলে নিল। একটা নম্বর ডায়াল করে বলল, “হ্যালো, কালিপুকুর থানা? আমি ৬৪/বি কালিচরণ লেন থেকে বলছি। এখুনি চলে আসুন। কাল রাতে এখানে একটা খুনহয়েছে। হ্যাঁ, হ্যাঁ, খুনই হয়েছে! আমি ওনার বাড়ি থেকেই বলছি। আমি কে? মৃতর স্ত্রী পারমিতা বলছি!”

সমাজের বাস্তব চিত্ত কল্পনা করে লেখা। ভুলভ্রান্তি ক্ষমার দৃস্টিতে দেখবেন। 
আপত্তিকর কিছু থাকলে কমেন্ট করে জানাবেন। 
ভালো লাগলে শেয়ার করতে ভুলবেন না।

সুপ্রিয় পাঠক, মূল্যবান সময় দিয়ে লেখাটি পঠনের জন্য জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।