Cute Orange Flying Butterfly 2016-10-09 ~ ‎অচিনপুরের আইয়ুব‬
আস-সালামু আলাইকুম। আমি আইয়ুব আনসারি। আমার লেখাগুলো পড়তে প্রত্যহ ব্লগটি ভিজিট করুন

রবিবার, ৯ অক্টোবর, ২০১৬

বর্ষণ-মুখর শুক্রবার

 বর্ষণ-মুখর শুক্রবার 

- AYUB ANSARY ( অচিনপুরের আইয়ুব )

বছর কয়েক আগের কথা। তখন হালকা হালকা শীত অনুভূত হচ্ছিল। 
মাঝে মাঝে দু-এক দিন বৃস্টিও হচ্ছিল। 
এ রকম একটা দিনের কথা আজ মনে পড়লো। 
দিনটা ছিল সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার। 
সারা সপ্তাহ জুড়ে মাত্র একদিন সময় পেলাম নিজের মত করে। 
সপ্তাহের অন্যান্য দিনগুলো কাটাতে হয় বিভিন্ন কর্মের সাথে। 
যেহেতু ব্যাস্ততার মাঝে মাত্র কিছু সময় পেলাম, তাই ভাবলাম আজ বাহিরে ইচ্ছেমত 
বেড়াব। 
সেই সাথে পরিকল্পনা অনুযায়ি অনিক, রবি, রাসেল কে সাথে নিলাম। 
চার জনে মিলে চলে গেলাম অনেক দূরে। 
সামনে যা দেখছি তা নিয়েই চলছে আমাদের তর্ক-বিতর্ক। 
এভাবেই চললাম খানিকটা পথ। 
তখন দুপুর হয়েছে। আযান হচ্ছে চতুর্দিকে। 
আমরা একটা মসজিদে গেলাম স্বলাত আদায় করতে। 
তখন নামায শেষ। আমরাও বেড়িয়ে পড়লাম। 
দুপুরের খাবার গ্রহনের জন্য আমরা হোটেল খুঁজছিলাম। 
কিন্তু পথের মাঝে কোন দোকানপাট দেখা যাচ্ছিল না। 
ঘন্টা খানেক পর আমরা এক হোটেল খুঁজে পেলাম। 
আমরা ভেতরে গিয়ে খাচ্ছিলাম। এমন সময় নামলো অঝর ধারায় বৃস্টি। 
তখন খাওয়া শেষ কিন্তু বৃস্টির কারণে আমরা বেরুতে পারছিলাম না। 
তখন একটু বৃস্টি কমলো। 
আমরা বাহিরে আসলাম। একটু পরে আকাশ ফ্রেশ হতে লাগলো। আমরাও গন্তব্যে ফিরছিলাম। 
এমন সময় অনিকের চোখে পড়লো এক বিড়াল বাচ্চা। 
আমাকে বললো দেখ আইয়ুব ঐটা কি? 
আমি দেখলাম বিড়ালটি বৃস্টিতে ভিজে মৃতপ্রায় অবস্থায় রাস্তার পাশে পড়ে আছে। 
আমি বললাম বিড়ালটি কে বাসায় নিয়ে যাব। 
এমন সময় রবি বাধা দিলো। 
তার মতে রাস্তা থেকে কিছু নিয়ে যাওয়া ঠিক হবে না। 
সে আরোও বললো যে তার পোষা বিড়ালগুলোর মাঝে থেকে আমাকে একটা দেবে । 
কিন্তু আমি তাতে রাজী হলাম না। আমি বললাম দেখ দোস্ত এই বিড়াল টা যদি আমরা ছেড়ে যাই তবে 
মারাও যেতে পারে। 
অবশেষে বিড়ালটা কে বাসায় নিয়ে আসলাম। 
আমার হাতে বিড়াল বাচ্চা দেখে আম্মু বললো, কিরে বিড়াল টা পাইলি কৈ? 
ঃ-আম্মু, রাস্তায় দেখি বিড়ালটা মৃতপ্রায় অবস্থায় ছিল। তাই নিয়ে আসলাম। 
- হুম, বিড়াল টা সুন্দর আছে তো। দেখি আমার হাতে দে।
(আম্মুর হাতে হস্তান্তর করলাম) 
ঃ- বিড়াল তো শীতে কাঁপছে। যাহ, চুলার পাশে রাখ। গরমে একটু স্বাভাবিক হোক। 

আম্মুর কথা অনুযায়ি আমি বিড়ালটা কে রান্নাঘরে চুলার পাশে রাখলাম। 
কিছুক্ষণ পর আম্মু বিড়ালটা কে একটু খেতে দিল। সে অল্প একটু খেল। 
কয়েকদিনের মধ্যেই বাসার সবার সাথে তার ভাব গড়ে উঠলো। 
ছোট ভাই এর নতুন খেলার সঙ্গী হলো বিড়ালটি। 
ছোট ভাই টম & জেরি দেখত নিয়মিত। 
তাই সে বিড়ালটির নাম রাখল টম। 
সে যখন টম বলে ডাক দিত তখনই ম্যাও ম্যাও শব্দে সাড়া দিত বিড়ালটি। 
একদিন রবি আমাদের বাসায় বেড়াতে আসলো। 
বাসায় আসার পর প্রথম তার নজর গেল বিড়ালের উপর। 
বিড়ালটা তারও নজর কাড়লো। 
ছোট ভাই রবির কাছে একটা জেরি চেয়ে বসলো। 
রবি তার কথায় একটা জেরি দেওয়ার কথা জানালো। 
সত্যি সত্যিই রবি একটা বিড়াল উপহার দিল ছোট ভাই কে। 
সে নতুন বিড়ালটির নাম দিল জেরি। 
এবার সে টম এবং জেরির সাথে নিয়মিত খেলা করা শুরু করলো। 
একদিন সে আমাকে বললো ভাইয়া টম ও জেরির বিয়ে দেব। 
ছেলে খেলার মত করে আমরা টম + জেরির বিয়ে দিলাম। 
এখন বাসার সবার কাছেই টম এবং জেরি অত্যন্ত প্রিয়। 
এভাবেই চললো কিছুদিন। 
একদিন হটাত করেই টম কে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। 
অনেক খোঁজাখোজি করার পরেও পাওয়া গেল না। 
ছোট ভাই কান্নায় চোখ ভাসাতে লাগলো। 
সেই সাথে আমিও কান্না করতে লাগলাম। 
চতুর্দিকে খুঁজলাম কোথাও দেখা মিলল না টম এর।

আজোও কান্না আসে সেই বিড়ালের কথা মনে পড়লে। 
আজ মনে হয়, কেনো সেদিন বিড়ালটা এনেছিলাম? 
যদি না আনতাম তাহলে এত ভালোবাসাও জন্মাতো না। 
আজ আর কান্নাও করতে হত না। 
সত্যিই সেই বিড়াল কে ভালবেসেছিলাম মনের অজান্তে। 
যা কখনোও ভুলে যাওয়া সম্ভব নয়। 

আজোও মনে পড়ে সেই বর্ষণমুখর শুক্রবারের কথা। 
এখনোও সময় পেলে রাস্তার পাশে খুঁজি এমন কোন এক বিড়াল কে। 
বছর পেরিয়ে গেল , কিন্তু কোন সন্ধান মিলেনি। 
জানি না এমন কিছু আর পাব কি না? 
যদি পাই তবুও ১ম টার কথা ভুলতে পারব কি কোনদিন??

#অচিনপুরের_আইয়ুব


স্বপ্নে দেখা স্বপ্নচারিনী

দুপুরবেলা আমি আর সিজান দুই বন্ধু ঘুমিয়েছিলাম। 
অনেকদিন পরে আমাদের দেখা হলো। 
তাই এক বেডেই দুজন ঘুমাচ্ছিলাম। 
তারপর হটাত ফোনের রিংটোন কানে আসছিল।
-কী করো?
ঃ-এই তো শুয়ে আছি।
- এখন সময় কত তার হুঁশ আছে? 
কখন থেকে ফোন দিচ্ছি রিসিভ করছো না। 
ঃ-ঘুমিয়ে ছিলাম তাই টের পাইনি। 
-নাও এখন ফ্রেশ হয়ে হাইস্কুলের মাঠে চলে এসো জলদি। সেই কখন থেকে আমি বসে আছি তোমার অপেক্ষায়......
ঃ- তুমি আরেকটু অয়েট করো। আমি আসছি....
ফোনটা রেখে আবারও ঘুমিয়ে গেলাম।
কিছুক্ষণ পরে আবারোও একই ব্যাক্তির ফোন।
ফোন রিসিভ না করেই চলে গেলাম ওয়াশরুমে। 
রেডি হতে প্রায় আধাঘন্টা লেগে গেল। 
এরপরে এক দৌড়েই চলে গেলাম মাঠে। 
গিয়েই দেখি সেঁজুতি দাঁড়িয়ে আছে।

-সেঁজুতি কি করো?
ঃ- কচু উঠাই। তোমাকে খাওয়ানোর জন্য!!
-কী বলো মানুষ কচু খায় নাকি?
ঃ- কোনদিন কেউ না খেলেও আজ থেকে খাবে। 
আর নিয়মিত খাবে। 
কথাশুনে ভ্যাবাচ্যাকা লেগে গেল। 
এমন সময় পাশের ছোট ছোট কচু গাছের পাতা ছিঁড়ে মুখে গুঁজে দিতে লাগল। 

-এই এই, এ কি করছ??
ঃ- কচু খাওয়াচ্ছি। 
- আসতে দেরী হয়েছে তাই রাগ করেছ??? 
আর দেরী হবে না কথা দিলাম। grin emoticon
ঃ- সত্যিই?
-অবশ্যই। 
এমন সময় সামনের রাস্তা দিয়ে ১ টা মেয়ে পায়ে হেঁটে যাচ্ছিল। 
সামনের দিকে নজর দিতেই,, 
-এই তুমি ঐ মেয়েটার দিকে তাকালে কেনো?
ঃ- আরে নাহ, আমি তাকাইনি। 
-আমার সাথে মজা করো???
(বলেই উঠে একটু দূরে গিয়ে বসতে বসতে,,
ঃ- যাও তোমার সাথে কোন কথা নেই। 
আমি চললাম আমার পথে। তুমি ঐ মেয়ে কে নিয়েই সময় কাটাও। gasp emoticon 
-দেখ সেঁজুতি। তোমার কোথাও ভুল হচ্ছে। 
ঃ- আচ্ছা কান ধরে বল যে আর কারোও দিকে তাকাবা না। 
- আমি কান ধরতে পারি না। frown emoticon
এ সময়ে সেঁজুতি দাঁড়িয়ে অন্যদিকে চলে যাচ্ছিল। 
- সেঁজুতি!! কৈ যাও?? 
ঃ- অন্য ভাল কোন ছেলের দিকে তাকাতে। 
- আরে!! কি বলছ এসব। আচ্ছা ( কান ধরে) এই কথা দিচ্ছি তোমাকে ছেড়ে আর অন্য কারোও দিকে তাকাব না।
তবুও একটু শান্তিতে থাকতে দাও প্লিজ। 
-কি বললা?? আমি তোমার শান্তি বিনষ্ট করছি??
ঃ-আরে এ!!! আমি সেটা বলিনি। 
-সত্যি বলো নি তো।
ঃ- না। সত্যিই বলিনি। 
-এই তো এবার লাইনে এসেছ। চলো আমরা ঐ বট গাছের নিচে বসি।

এমন সময় সিজান আমাকে লাত্থি মেরে বেড থেকে নিচে ফেলে দিল। 
আমি হতচকিয়ে উঠলাম। 
এমন সময় সিজান বলে উঠলো, দোস্ত সেঁজুতির কথা তো এর আগে কোনদিন বলিস নি। 
একা একা লাইন মারস হ্লা। 

অনেক কিছুতেই বোঝানোর চেস্টা করলাম যে সত্যিই এমন কিছু নাই। 
ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে দেখছিলাম। 
কিন্তু কেমন জানি বাস্তবই মনে হচ্ছিল। 
দোস্ত প্লিজ বিশ্বাস কর...........