Cute Orange Flying Butterfly 2016-09-18 ~ ‎অচিনপুরের আইয়ুব‬
আস-সালামু আলাইকুম। আমি আইয়ুব আনসারি। আমার লেখাগুলো পড়তে প্রত্যহ ব্লগটি ভিজিট করুন

বুধবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

অসতর্কতার পরিণাম

অসতর্কতার পরিণাম

                                                                               -Rayhan Ahmed




সাগর বাবুগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির এক মেধাবী ছাত্র।
ছোট থেকেই ছেলেটা একটু ডানপিঠে স্বভাবের।
সে ক্লাসে খুব ভালো হলেও ধরাবাঁধা নিয়মনীতি মানতে নারাজ।
পড়াশোনায় অন্যদের তুলনায় ভালো হলেও শৃঙ্খলাবিধি না মানার দায়ে প্রায়ই
মকবুল স্যারের কানটানি খেতো।
.
একদা সে লেখাপড়ার প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম কেনার জন্য শহরে যায়।
সে মূলত গ্রামের ছেলে।
গ্রাম থেকে শহর প্রায় ৮ কি.মি দূরে।
সে বাস যোগে করিমগঞ্জ বাস স্টান্ডে পোঁছে।
স্টান্ড থেকে ঠিক বিপরীত পথে লাইব্রেরি বাজার।
সেখান থেকে মিনিট পাঁচেকের পথ।
প্রায় ১০০ গজ দূরে ওভারব্রীজ। ওভারব্রীজ পেরিয়ে ১ টু বামদিকে গেলেই লাইব্রেরী বাজার।
সে ভাবলো ওভারব্রীজ পার হওয়া টা ঝামেলার। তাই  রাস্তার মাঝ  দিয়ে পার হওয়ার পরিকল্পনা করলো।
রাস্তায় জানজট ছিলো প্রচুর।
কিন্তু সে তবুও রাস্তা পার হবেই। তখন ১টু জানজট কমেছে।
রাস্তা বেশ ফাঁকাফাঁকা।
সে ভাবলো এটাই রাস্তা পার হবার উপযুক্ত সময়।
সে দিলো এক দৌড়। আর মাত্র ২/৩ ধাপ দিলেই সে পেরিয়ে যাবে।
রাস্তার ওপাশ থেকে তীব্র গতিতে ছুটে আসছিল এক মোটর সাইকেল।
.
মুহুর্তেই ঘটে গেল #অনাকাঙ্খিত ঘটনা।
মোটরসাইকেল টা একপাশ থেকে সাগরকে চাপা দিলো।
দৌড় মূখী থাকার কারণে সাগরের পায়ে আঘাত লাগলো।
সে রাস্তায় মুখ থুবড়ে পড়ে গেলো। সাথে বিকট আকারের চিৎকার করলো।
চিৎকার শুনে এগিয়ে আসলো পথচারীরা।
.
তারা দেখলো সাগরের পা থেকে রক্ত ঝরছে।
এমতাবস্থায় তারা সাগরকে  সিএনজি যোগে করিমগঞ্জ সদর হাসপাতালে
পৌঁছায়।
তাকে জরুরী বিভাগে ভর্তি করানো হয়।
ডাক্তারের রিপোর্ট অনুযায়ী জানা যায়  সাগরের ডান পা ভেঙে গেছে।
আর সেই সাথে বাম পা আঘাতপ্রাপ্ত  হয়েছে।
জরুরি বিভাগ থেকে সামান্য ব্যান্ডেজ করে দিয়ে সাগরকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠায়।
সেখানে তার চিকিৎসা চলে।
.
প্রায় ২ মাস পরে সাগর বাড়ি ফিরে।
সে বাড়ি ফিরলেও  সাথে বাড়ি ফিরেনি তার ডান পা।
কারণ, সেই পা কেটে ডাক্তার কৃত্রিম পা লাগিয়ে দিয়েছিল।
আজ সাগর নামের সেই ছেলেটি পঙ্গু।
সে পারে না নিজের মতো করে চলাফেরা করতে।
স্কুলে যাওয়ার সৌভাগ্য হয় না তার।
আর খায় না মকবুল স্যারের কানটানি।
বন্ধুদের সাথে আর বিকালের অলস সময়ে খেলা-ধুলার সুযোগ হয় না তার।
.
আজ সে অসহায়।ক্রমশ কুয়াশাচ্ছন্ন হয়ে উঠলো তার রঙ্গিন ভবিষ্যৎ।  সে আজ শুধুই দুশ্চিন্তাগ্রস্থ।
যা তার সামান্য অসতর্কতার জন্যই হয়েছে।
সে আজ অনুতপ্ত।
আজ সে বারবার বলছে কেন সে ওভারব্রীজ ব্যাবহার করলো না!!
কেন সে নীয়মনীতি মানতে নারাজ ছিলো!!!
এসব চিন্তা করতে করতে সে মানষিকভাবে মৃত্যুর দিকে ধাবিত হতে থাকে।
.
সুতরাং আসুন আমরা শৃংখলাবিধি মেনে চলার চেস্টা করি।
সকল কাজেই ধৈর্যের পরিচয় দেই।
যেন আমার/আপনার জীবনেও সাগরের মত অনাকাঙ্খিত কিছু না ঘটে যায়।
.
আবারোও বলছি সকলেই সচেতন থাকবেন।
স্মরণ রাখবেন যেঃ- "একটা দূর্ঘটনা সারা জীবনের কান্না।"
অবশেষে সকলের সুস্বাস্থ এবং উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করে বিদায় নিচ্ছি।
আল্লাহ হাফেজ।




সমাপ্ত