Cute Orange Flying Butterfly জানুয়ারী 2017 ~ ‎অচিনপুরের আইয়ুব‬
আস-সালামু আলাইকুম। আমি আইয়ুব আনসারি। আমার লেখাগুলো পড়তে প্রত্যহ ব্লগটি ভিজিট করুন

রবিবার, ২৯ জানুয়ারী, ২০১৭

রাত জাগার ভয়াবহ পরিণতি


**কুরআন ও বিজ্ঞানের আলোকে রাত জাগার ভয়াবহ পরিণতি ** 



 

রাত জাগা আমাদের নিত্যদিনের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।
কারণ থাক আর না থাক আমরা রাত জাগি।
কেউবা নিদ্রা শূণ্যতায়ও জেগে থাকি।
তবে বেশিরভাগ ব্যক্তিই শখের বশে রাত জেগে থাকে।
কিন্তু রাত জাগার ভয়াবহ ক্ষতিকর প্রভাবগুলো আমরা কজন'ই বা জানি ??
 আসুন, আজ আমরা রাত জেগে থাকার কিছু ভয়াবহ দিকের সাথে পরিচিতি অর্জন করি।
এক্ষেত্রে আমরা প্রথমত কুরআন থেকে দেখবো , সৃষ্টিকর্তা রাত কে কেন বানিয়েছেন!
.
আল্লাহ রাব্বুল আ'লামীন যা কিছু সৃষ্টি করেছেন তার প্রতিটির পেছনেই কোন না কোন
উদ্দেশ্য নিহিত আছে।
সুতরাং রাত কে তৈরির পেছনেও তাঁর কোন না কোন কারণ আছে।
চলুন একনজর দেখি তিনি রাতের ব্যাপারে কোন বিবৃতি প্রদান করেছেন কি-না?
আমরা এ ব্যাপারে পবিত্র কোরআনের দিকে তাকালে দেখতে পাইঃ-
.
১। সূরা গাফির এর ৬১ নং আয়াতে আল্লাহ তায়াল বলেনঃ-
“আল্লাহ তোমাদের জন্য রাত বানিয়েছেন ।
যাতে তোমরা তাতে বিশ্রাম করতে পার এবং দিনকে করেছেন আলোকোজ্জ্বল।
নিশ্চয় আল্লাহ মানুষের প্রতি বড়ই অনুগ্রহশীল। কিন্তু অধিকাংশ
মানুষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না”।
.
২। সূরা রূম এর ২৩ নং আয়াতে আল্লাহ তায়াল বলেছেন ঃ-
“আর তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে রাতে ও দিনে তোমাদের
নিদ্রা এবং তাঁর অনুগ্রহ থেকে তোমাদের (জীবিকা) অন্বেষণ।
নিশ্চয় এর মধ্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে সে কওমের জন্য যারা
শোনে”।
.
৩। আল্লাহ তায়াল সূরা ইউনূসের ৬৭ নং আয়াতে বলেছেনঃ-
“তিনিই সে সত্তা, যিনি তোমাদের জন্য রাতকে সৃষ্টি করেছেন।
যেন তোমরা তাতে বিশ্রাম নাও এবং দিনকে করেছেন আলোকময়।
নিশ্চয় এতে রয়েছে নিদর্শনাবলি এমন কওমের জন্য যারা শুনে”।
.
৪। আল্লাহ তায়ালা সূরাতুল ফুরকান এর ৪৭ নং আয়াতে বলেছেনঃ-
"আর তিনিই তোমাদের জন্য রাতকে আবরণ ও নিদ্রাকে আরামপ্রদ
করেছেন এবং দিনকে করেছেন জাগ্রত থাকার সময়”।
.
উপরোক্ত আয়াতগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যাচ্ছে যে স্বয়ং সৃষ্টিকর্তা রাতে ঘুমানোর ব্যাপারে বিশেষভাবে গুরুত্ব আরোপ
করেছেন।
এবার আমরা পৃথীবির সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হয়রত মুহাম্মাদ সাঃ এর কাছে ফিরে গিয়ে দেখি তিনি রাত্রীবেলা কি করতেন?
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এশার পূর্বে ঘুম ও এশার পর কথোপকথন অপছন্দ করতেন।
আবু বারযাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত:-
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এশার পূর্বে ঘুম
ও পরে কথাবার্তা অপছন্দ করতেন”। বুখারি: (৫৩৭), মুসলিম: (১০৩২)

.
রাসূলের হাদিস থেকেও আমরা জানতে পারি যে, রাত্রীবেলা অন্যান্য কাজ উপেক্ষা করে ঘুমানো উত্তম।
কিন্তু বর্তমান প্রজন্ম কারণে - অকারণেই রাত জেগে থাকে।
একেকজন নিজেকে রাতজাগা পাখি বলে দাবী করে থাকে।
অথচ, ঘুম আমাদের জন্য অপরিহার্য বস্তু।
একমাত্র ঘুম-ই পারে দিনের কঠোর পরিশ্রম এর দ্বারা অর্জিত ক্লান্তি নিরসন করতে।
কোন প্রাণী লাগাতার নির্ঘুম থাকতে পারে না।
যে কৃত্রিম উপায়ে চেষ্টা করবে, তার মৃত্যু নিশ্চিত।

আসুন এবার দেখি আধুনিক বিজ্ঞান এই ঘুমের ব্যাপারে কি বলছেঃ-

রাত জেগে কাজ করলে দেহের স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় ব্যাপক ধস নামে। অপূরণীয় ক্ষতি হয় দেহের।
বিবিসি অনলাইনের এক প্রচারণায় জানা গেছে যুক্তরাজ্যের গবেষকরা সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এমন তথ্যই পেয়েছেন।
রাতের বেলায় কাজের সঙ্গে জড়িত থাকা ব্যক্তিদের উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ ও ক্যানসারের ঝুঁকির সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছেন গবেষকরা।
যুক্তরাজ্যের স্লিপ রিসার্চ সেন্টারের গবেষকরা সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখেছেন,
রাত জেগে কাজের যে কুফল তা গভীরতর আণবিক স্তরে পরিলক্ষিত হয়।
রাত জাগার ক্ষতির পরিমাণ আশ্চর্যজনক বলে মনে হয়েছে তাদের নিকট।
গবেষকরা জানান,
রাত জাগার ফলে হরমোন পরিবর্তন, দেহের তাপমাত্রায় রদবদল, মেজাজ ও মস্তিষ্কে ব্যাপক প্রভাব পড়ে।
গবেষণা সংক্রান্ত নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে ‘প্রসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস’ সাময়িকীতে।
রাত জাগা ২২ ব্যক্তিকে নিয়ে তারা গবেষণা করে শারীরিক পরিবর্তনের বিষয়গুলো খেয়াল করেন।
তাদের দাবি, রাতে অনিয়মিতভাবে কাজ করলে
শরীরে কী ধরনের ক্ষতি হয় গবেষণার ফলে তা জানা সম্ভব।
রাত জাগার ফলে যে যে প্রভাব পরিলক্ষিত হতে পারে বলে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন তা
নিম্নে আলোচনা করা হলোঃ-

১. মানসিক রোগঃ
যারা রাতে ঠিকমত ঘুমায় না বা রাত জেগে থাকে তাদের মধ্যে বিষণ্নতা (Depression),
অস্থিরতা (Anxiety), বিরক্তি (Irritability), হ্যালুসিনেশন (Hallucination) সহ নানাবিধ
মানসিক রোগের বা উপসর্গের প্রাদুর্ভাব বেশী দেখা যায়।
আর যারা ইতোমধ্যে এসব রোগে ভূগছেন তাদের রোগের প্রকোপ বেড়ে যায়।
একারণে মানসিক রোগের চিকিৎসায় ঘুমের ঔষধের প্রয়োগ বেশ দেখা যায়।

২. স্মৃতিশক্তি কমে যায়ঃ
আমরা সারাদিন যা শিখি তা ব্রেনে স্থায়ীভাবে ধরে রাখতে ঘুম অপরিহার্য্য।
ঘুমের মধ্যে স্মৃতির Consolidation প্রক্রিয়ায় স্থায়ীরূপ লাভ করা সহজ হয়।
রাতে অপর্যাপ্ত ঘুমালে অর্জিত তথ্য স্মৃতিতে স্থায়ীরূপ লাভ না করতেও পারে।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে রাত জাগা ও অপর্যাপ্ত ঘুমানো ছাত্রদের একাডেমিক পারফর্মেন্স যারা স্বাভাবিক ঘুমায় তাদের তুলনায় কম।
এ কারণেই পরীক্ষার আগের রাতে অনেক রাত পর্যন্ত জেগে পড়াশোনা করা অনুচিত।

৩. সড়ক দূর্ঘটনাঃ
রাতে ঠিকমত ঘুম না হওয়ার পরিণতিতে ড্রাইভিং এর সময় তদ্রা, মনোযোগের অভাব, বিরক্তি,
স্মৃতি বিভ্রাটজনিত সমস্যা, তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়াশীলতার ঘাটতিতে শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবছর
১লক্ষেরও বেশী সড়ক দূর্ঘটনা ঘটে।
যার প্রভাবে ১৫৫০জন নিহত হয় এবং আহত হয় প্রায় ৪০,০০০ মানুষ।

৪. ভুল স্মৃতি তৈরি হওয়াঃ
যারা রাতে পর্যাপ্ত ঘুমান না তাদের ভুল স্মৃতি তৈরি হওয়ার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়।
অর্থাৎ যে ঘটনা ঘটেনি তার স্মৃতি তৈরি হওয়া।
যেমন, এক ব্যক্তি রাতে তার স্ত্রীকে হয়ত কিছুই বলেনি অথচ
তিনি সকালে হৈ চৈ বাঁধিয়ে দিতে পারেন এই বলে “তোমাকে কাল রাতে বললাম না খুব সকালেই
আমাকে বেরুতে হবে,কাজেই নাস্তা রেডি রাখিও।”
৫. আত্মহত্যার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়ঃ
যে সকল মানসিক রোগে মানুষ আত্মহত্যা করে থাকে তাদের বেশীর ভাগেরই অন্যতম
উপসর্গ রাতে ঠিকমত ঘুম না হওয়া।
গবেষকরা প্রমাণ পেয়েছেন যেসব কিশোর কিশোরীরা রাতে ৫ ঘন্টার কম ঘুমায় তাদের বিষন্নতায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ৭১% বেশী এবং
আত্মহত্যার চিন্তা ৪৮% বেশী এমন কিশোর কিশোরীদের তুলনায় যারা রাতে ৮ ঘন্টা ঘুমায়।
রাত ১০টার পরে ঘুমালে আত্মহত্যার সম্ভাবনা প্রায় ২০% বেড়ে যায় এমনকি ৮ ঘন্টা ঘুমালেও।
৬. হার্টের সমস্যাঃ
যারা রাতে ৬ঘন্টার কম ঘুমায় তাদের উচ্চ রক্তচাপে ভোগার বা নিয়ন্ত্রিত রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ার সম্ভবনা খুব বেশী।
তাছাড়া রাতজাগা রোগীদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের প্রাদুর্ভাব বেশী দেখা যায় এবং তা
স্বাভাবিকের তুলনায় ৪ গুণ বেশি।সাধারণ মানুষের তুলনায় রাতজাগা মানুষের হৃদপিন্ডের
অসুখ-বিসুখের ঝুঁকি প্রায় ৪০% বেশী।
Warwick medical school এর গবেষকরা বলেছেন “যদি আপনি রাতে ৬ঘন্টার কম ঘুমান এবং ঘুম ঠিকমত না হয় তাহলে আপনার
হৃদরোগ হওয়ার বা তা থেকে মারা যাওয়ার সম্ভবনা ৪৮% বেশী এবং স্টোকে আক্রান্ত হওয়া বা থেকে মারা যাওয়ার সম্ভবনা ১৫% বেশী।”

৭. দেহের বৃদ্ধি কমে যেতে পারেঃ
ঘুমের মধ্যে দেহের বৃদ্ধির জন্য দায়ী Growth Hormone এর নিঃসরণ বেশী হয় এবং এসময় দেহের বৃদ্ধির হারও বেশী থাকে।
রাতের বেলা উচ্চতা বৃদ্ধির কারণেই অনেক সময় শিশুদের জয়েন্টে ব্যথা হয়
(জয়েন্টের কাছাকাছি হাড়ের অংশে দৈর্ঘ্য বৃদ্ধির জন্য দায়ী এপিফাইসিয়াল প্লেট থাকে যা বৃদ্ধির সময় ব্যথার
অনুভূতি তৈরি করে)।সুতরাং যারা রাতে ঠিকমত ঘুমান না (বিশেষত শিশু ও টিনএজারদের ক্ষেত্রে) তাদের দেহের বৃদ্ধি কমে যেতে পারে।

৮. ব্রেস্ট ও ওভারীর ক্যান্সারঃ
এক গবেষণায় জানা গেছে যেসব কর্মজীবি নারীরা রাত জেগে কাজ করেন তাদের
স্তন ও ডিম্বাশয়ে ক্যান্সারের ঝুঁকি যারা শুধু দিনের বেলায় কাজ করেন তাদের তুলনায়
যথাক্রমে ৩০% ও ৪৯% বেশী। প্রস্টেট ক্যান্সারের মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে থাকেন রাতজাগা নারী-পুরুষরা।।

৯. পেটের সমস্যাঃ
যারা রাত জাগেন তাদের মধ্যে বুক জ্বালাপোড়া করা, পেপটিক আলসার, বমি বমি ভাব, বমি
হওয়া, ইরিটেবল বাউয়েল সিনড্রোম(IBS), ডায়রিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য সহ নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।
এ্যাসিডিটির সমস্যা হওয়ার ফলে পরবর্তীতে তা পাকস্থলীর আলসারে রূপ নেয়ার সমূহ সম্ভাবনা তৈরী হয়।

১০. রিপ্রডাকশন ও সেক্সঃ
রাত জাগা মহিলাদের অনিয়মিত মাসিকের সমস্যা,অকালে সন্তান প্রসব, কম ওজনের সন্তান
হওয়া, ব্যাথাযুক্ত মাসিক এবং কোন কোন ক্ষেত্রে সন্তান না হওয়ার মত সমস্যা হতে পারে।
গ্যামিট কম তৈরী হওয়ায় রিপ্রোডাকশন সিস্টেমের ফার্টিলিটি কমে যায়।বর্তমানে বিশেষজ্ঞরা
অনিয়মিত ও অপর্যাপ্ত ঘুমকে বন্ধ্যাত্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হিসাবে বিবেচনা করছেন।
এছাড়াও গবেষণায় দেখা গেছে যেসব নারী- পুরুষ রাতে ঠিকমত ঘুমায় না তাদের যৌনাকাঙ্খাও (Libido) কমে যেতে পারে।

১১. মাইক্রোস্লিপ (Microsleep) :
মাইক্রোস্লিপ হলো কোনরকম পূর্বাভাস ছাড়াই হঠাৎ করে কয়েক সেকেন্ড থেকে ৩০
সেকেন্ডের জন্য ঘুমিয়ে পড়া এমনকি কাজ করা অবস্থায়ও। যারা রাত জাগেন এবং পর্যাপ্ত ঘুমান না
তাদের মধ্যে মাইক্রোস্লিপের প্রবণতা বেশী দেখা যায়।যারা ড্রাইভিং করেন বা মেশিন চালান তাদের
জন্য এ অবস্থা মারাত্মক দূর্ঘটনা ও প্রাণহানির কারণ হতে পারে।

১২. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাসঃ
দীর্ঘদিন ধরে রাত জাগার কারণে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায়। বিশেষতঃ
ভাইরাসজনিত রোগবালাইয়ে ভোগার সম্ভবনা বেশ বেড়ে যায়। শরীরের রোগ প্রতিরোধক
কোষের সঙ্গে দেহঘড়ির বিশেষ সংযোগ রয়েছে। ফলে রাত জাগলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে আসে।
যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ইমিউনোলজিস্ট তার গবেষণায় দেখেন, এনফিল৩
নামে এক ধরনের প্রোটিন রোগ প্রতিরোধক কোষ উৎপাদন করে থাকে। কিন্তু রাত জাগার ফলে এ প্রোটিনের জিনে
যে পরিবর্তন আসে তা ব্যক্তির বিভিন্ন শারীরিক উপসর্গের জন্য দায়ী। আবার এ প্রোটিন যাদের শরীরে কম রয়েছে
তাদেরও ঘন ঘন অসুখে পড়ার আশঙ্কা থাকে। বেশি রাত জাগার অভ্যাস থাকলেই মূলত এ ছন্দপতন হয়।

২১.মাথাব্যাথাঃ
যারা রাতে ঠিকমত ঘুমান না তাদের মাথাব্যাথা হওয়ার ও মাইগ্রেনের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ার
প্রবণতা বেশী দেখা যায়।মস্তিষ্কের টিস্যু নষ্ট হওয়া শুরু হয়।

২৬. নৈতিকতার অধপতনঃ
যারা রাত জাগেন ও পর্যাপ্ত সময় ঘুমান না তাদের নৈতিকতার বিচারবোধ হ্রাস পেতে পারে।
নৈতিকতার বিচারবোধ হ্রাস পাওয়ায় তার দ্বারা অহেতুক
অনৈতিক কাজ সম্পন্ন হতে পারে।
(তথ্যসূত্রঃ- বিভিন্ন পত্রিকা ও উইকিপিডিয়া )

উপরোক্ত আলোচনা থেকে আমরা অবশ্যই জানতে পেরেছি যে, একজন ব্যক্তির জন্য পর্যাপ্ত ঘুমানো অত্যাবশ্যক।
আর তা অবশ্যই রাতের বেলা।
উপরোল্লিখিত সমস্যাদি ছাড়াও আরোও অনেক জটিল সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে আমাদের সামান্য অসতর্কতার ফলে।
আর নিজেকে স্বেচ্ছায় ধ্বংসমুখে ঠেলে দেওয়া কখনোও জ্ঞানীর কাজ নয়।
সুতরাং, আসুন আমরা একজন বিবেকবান ব্যক্তি হিসেবে রাত জাগার মত বদঅভ্যাস টা বর্জন করি।
পরিমিত ঘুমানোর চেষ্টা করি।
সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ার চেষ্টা করি।
যেহেতু স্বয়ং সৃষ্টিকর্তা আমাদের রাত্রীবেলা ঘুমানোর নির্দেশ প্রদান করেছেন।
সেহেতু তাঁর হুকুম মেনে চলার চেষ্টা করি।
নিশ্চয়ই তাঁর নির্দেশনাবলী মাঝেই লুকিয়ে আছে উত্তম সফলতা।

বুধবার, ২৫ জানুয়ারী, ২০১৭

Terms of use

নীতি-মালা

আসসালামু আলাইকুম। 
কেমন আছেন ? আশাকরি ভালো-ই আছেন । 
আমিও আপনাদের দোয়া এবং আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো আছি । 
আজ আমি আপনাদের মাঝে এক গুরুত্বপূর্ণ বস্তু নিয়ে উপস্থিত হয়েছি, 
এভাবে বললে ভুল হবে না যে, আমি এই কাজ টি শুধুমাত্র আপনাদের কল্যাণার্থেই করেছি। 
এভাবে কি ভাবছেন!! আমি তেমন কিছু বানাতে পারিনি । 
অতি ক্ষুদ্র এক প্রোগ্রাম বানিয়েছি। 
প্রোগ্রাম এর নাম Facebook Disable Friend's Removal By Ayub Ansary 

আপনি এই প্রোগাম টি অনায়াশেই ব্যবহার করতে পারেন । 
তবে ব্যবহার করার ক্ষেত্রে কিছু নীতিমালা অনুসরণ করতে হবে। 

১। আমার বানানো প্রোগ্রাম কপি করা যাবে না। 
২। কপি করে অন্য কোন সাইটে আপলোড করা যাবে না। 
৩। আংশিক পরিবর্তন করে নিজের নামে চালানো যাবে না। 
৪। স্প্যাম করা যাবে না। 
৫। এই প্রোগ্রাম ব্যবহার করে কারোও কাছে থেকে টাকা বা যে কোন বিনিময় মূল্য গ্রহন করা যাবে      না। যদি গ্রহন করে থাকেন তবে বিচার দীবসে জবাবদিহীতা করতে হবে। 

প্রোগ্রামে যে যে সুবিধা পাচ্ছেন ঃ- 

শুধুমাত্র প্রোগ্রাম চালু করলেই অটোমেটিক ভাবে ডিজেবল ফ্রেন্ডগুলো রিমুভ হবে। 
এতে আপনার অতিরিক্ত কোন ঝামেলা করতে হবে না । 

এক নজরে দৌলতদিয়া পতিতালয় - ভ্রমণ ও অর্জিত অভিজ্ঞতা


দৌলতদিয়া পতিতালয় ভ্রমণ অভিজ্ঞতা

ভ্রমণ অভিজ্ঞতা

স্থানঃ দৌলতদিয়া পতিতালয় 


এশিয়া মহাদেশের সর্ববৃহৎ এই পতিতাপল্লীর নাম শোনেনি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দূষ্কর। যা অবস্থিত রাজবাড়ি জেলার অন্তর্গত দৌলতদিয়ায়। এটার অবস্থান এমন এক জায়গায় যে দক্ষিণবঙ্গের মানুষজন এই রুট ছাড়া অন্য কোন রুটে চলাচলও করতে অক্ষম।  

দক্ষিণবঙ্গে যেহেতু জীবনের বেশ কিছু সময় কাটিয়েছি, সেহেতু এই রাস্তা ধরে চলাচল করতে হয়েছে বহুবার। ঢাকায় আসা-যাওয়ার জন্য এই দৌলতদিয়া - পাটুরিয়া নৌরুট'ই একমাত্র সমাধান। সেই সুবাদে ঘাটে অনেকবার গিয়েছি। 

কিন্তু! বাজারের পাশেই অবস্থিত এই নিষিদ্ধ পল্লীতে কখনো যাওয়া হয়নি। লোকমুখে অনেক কথাই শুনেছি এই এলাকা সম্পর্কে। আমার কিছু বন্ধু-বান্ধব তো তাদের সর্বস্ব খুঁইয়েছে এই এলাকায়। 

সময়টা ২০১৬ এর শেষ মাস মানে ডিসেম্বরের দিকে। আমি আর মাহমুদ (ক) ফরিদপুর থেকে ঢাকায় ফিরছিলাম। যেহেতু শীতকাল, সেহেতু আমরা সকাল সকাল রওনা দিলাম। ফরিদপুর পলিটেকনিক সংলগ্ন বায়তুল আমান বাজার থেকে থ্রি-হুইলার তথা অটোতে পৌঁছলাম ফরিদপুর নতুন বাসস্ট্যান্ড। 

এরপর ঘাটের গাড়িতে (বাস) চড়ে পৌঁছলাম দৌলতদিয়া বাস টার্মিনালে। বাস টার্মিনালের বিপরীতে যে ছোট ছোট টিনের ঘরগুলো দৃশ্যমান, সেখান জুড়েই নাকি পতিতাদের বসবাস। দিন নেই, রাত নেই! অবিরাম লাখো পাপীর পাপের বোঝা ভারী হয় এখানে। লাখ লাখ লোকের পাপের সাক্ষী এই অঞ্চল। 

সেই নিষিদ্ধ এরিয়ায় যারা গিয়েছেন, তারা আমার চেয়ে ভালো বলতে পারবেন।  যা হোক, এখান থেকে ফেরী বা লঞ্চের মাধ্যমে পার হতে হবে সর্বনাশা পদ্মা নদী। সেখান থেকে বাসে আবার যেতে হবে ঢাকার দিকে। বেশ সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। এদিকে আমাদের ওজন কমানো জরুরি হয়ে পড়েছে। 

টার্মিনালের অপোজিটে একটা সরু রাস্তা ভেতরের দিকে চলে গেছে। এ রাস্তার শেষ কোথায় কে জানে! আমরা দুজনে সেদিকে এগোলাম পেশাব করার জন্য। জনমানবহীন রাস্তার ধারে এক খড়ের গাদা পেয়ে গেলাম। আর সেখানেই দুজনে জরুরত সাড়লাম। 

মাহমুদ আমাকে আগেই জানিয়ে দিয়েছিলো, এই এলাকা মোটেও সুবিধার না। ডানে বামে বেশি তাকাতাকির প্রয়োজন নেই। আর কালক্ষেপন করলেই বিপদের আশঙ্কা। সেই হিসেবে আমরা তড়িৎ গতিতে প্রস্থানের চেষ্টা করলাম। 

ফেরার সময় দেখলাম টং দোকানগুলোর পাশে অটো-রিকশার ভিড়। আমরা দুজনে হাঁটতে হাঁটতে টং দোকানগুলোর কাছে পৌঁছলাম। মাহমুদ তার জন্য একটা সিগারেট আর আমার জন্য ক্যান্ডি নিলো। এরপর আমরা পাশাপাশি হাঁটতে হাঁটতে সামনের দিকে চললাম। 

এমন সময় মোটামুটি বয়স্ক একটা ব্যক্তি (৪৫) আমাদের পাশ কাটিয়ে জোরে হাঁটতে থাকলো। যেই আমাদের কাছাকাছি আসলো, তখনই খামাখা বাতাসের সাথে কথা বলতে শুরু করলো। 

কথার সাথে তাল মিলিয়ে আমাকে জিজ্ঞেস করলোঃ 

- কি বলেন ভাই? 

( আমি চুপচাপ সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলাম) আর কয়েকধাপ দিলেই আমরা ৩ মাথায় পৌঁছে যাবে। এমন অবস্থায় রাস্তার পাশে আমি থেমে গেলাম ,মাহমুদও থামলো।। 

এবার লোকটি আমাদের সাথে কথা বলার চেষ্টা করতে লাগলো আরো সিরিয়াসভাবে। আমরা তাকে এভয়েড করছিলাম । আমরা রাস্তা পেরিয়ে যাচ্ছি এমন  সময় লোকটি বললোঃ

- পাড়ায় গেলে এইদিক দিয়ে যান । কোন সমস্যা নাই, আমরা আছি। 

আমরা তার কথায় ভ্রূক্ষেপ করলাম না। আপনগতিতে অগ্রপাণে চলছি...

একটু এগোতেই পিছু নিলো কয়েকজন রিকশা ওয়ালা। গা ঘেঁষে রিকশা চালাচ্ছে আর বলছে, 

- ৫ টাকা দেন গেটে নামিয়ে দিয়ে আসি। হেঁটে গেলে দালালের পাল্লায় পড়বেন। ওরা জ্বোরাজোরি করে বাজে কাণ্ড ঘটাবে। ( কিন্তু ওরা নিজেই দালাল ছিল) 

আমরা পাত্তা না দেওয়ায় কয়েকজন সড়ে গেল। খানিকবাদে একজন রিকশাওয়ালা নাছোড়বান্দার মতো পিছু নিল। 

চলেন ভাই , বিনা রিস্কে নামাই দিয়া আসি। মাহমুদ সামনে আমি পেছনে। একধাপ দুইধাপ করে সামনে এগুচ্ছি। আমাদের গা ঘেঁষে রিকশা নিয়ে যাচ্ছিলো লোকটি। আমরা দুজনেই বেশ চুপচাপ এগিয়ে যাচ্ছিলাম। 

এমন সময় আবারোও রিকশাওয়ালার রিকুয়েস্ট শুনে একটু ঝাড়ি দিয়ে বললামঃ 

- কথা বোঝেন না ? 
মাহমুদঃ- আরে মিয়া দেখেন কোনদিকে যাই... 
রিকশাওয়ালাঃ- এ যুগে ভাল কথা বলতে নাই। 
( আরোও কিছুদূর গেলাম ) 

এসময় কয়েকটি রিকশা আমাদের পথরুদ্ধ করার চেষ্টা করছিলো। নিরুপায় হয়ে মুখ খুলতে বাধ্য হলাম। পরিস্থিতি ভালো না দেখে বেশ অশ্লিল বাক্য-বিনিময় চললো। 

আমাদের কনফিডেন্ট লেভেল হাই দেখে তারা আমাদের বাসা কোথায় তা জানতে চাইলো। পরিস্থিতি আরো বাজে হতে পারে দেখে আমরা ভিন্ন পথে হাঁটার চেষ্টা করলাম। 

বাস্তবে আমার বাসা রাজশাহীর অদূরে নওগাঁ জেলায়। আর মাহমুদ পাবনার ছেলে। আমরা স্রেফ জানিয়ে দিলাম, আমাদের বাসা ফরিদপুর সদরের গোয়ালচামট। আমাদের পরিচিত কিছু ব্যক্তির নাম জানিয়ে দিলাম। আমাদের সাথে আর বেশি কিছু করার চেষ্টা করলে তাদেরকে জানিয়ে দেয়ার কথা জানালাম। 

তারা একে একে কেটে পড়লো। আমরা নিরাপদে টার্মিনালের এপাশে পৌঁছলাম। তারপর ফেরিঘাটে গিয়ে ফেরীতে করে পাটুরিয়া ঘাটে পৌঁছলাম। 

নদীর এপাশে এসে শান্তির নিঃশ্বাস ফেললাম। আমরা এমন পরিস্থিতির জন্য সম্পূর্ণ অপ্রস্তুত ছিলাম। সামান্য ট্রিক্স কাজে না লাগালে বা কনফিডেন্ট লেভেল একটু কম থাকলেই আমরা ফেঁসে যেতাম। 
আমাদের কাছে থাকা সহায় সম্বল সব তারা রেখে দিতো। 

শুধু এতেই শেষ হতো না, তারা আমাদের পরিবারের লোকজনের কাছে ফোন করে আমাদের ব্যাপারে বাজে কথা বলা হতো। এমনকি আমাদেরকে বেঁধে রেখে মুক্তিপণও আদায় করার চেষ্টা করতে পারতো। 

সতর্কতাঃ

এলাকা ঘুরে যা বুঝলামঃ 

যদি আপনি অতিরিক্ত চালাক বা একদম ভীতু হোন তবে আপনি তাদের শিকার হতে সময় লাগবে না। 
কাছে যা আছে সব কেড়ে নিবে। আর এমন কাহিনী আজ নতুন নয়। প্রতিনিয়ত এমন কাহিনী ঘটে থাকে সেখানে।  

আপনার মান-সম্মানের ফালুদা বানিয়ে ছাড়বে। আপনি একজন চরিত্রবান ব্যক্তি হলেও তারা আপনাকে চরিত্রহীন বানিয়ে দিবে। সমাজে মুখ দেখাবার মতো পরিস্থিতি আর থাকবে না। 

বিভিন্ন সময়ে জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর সমূহঃ

দৌলতদিয়া কিভাবে যাওয়া যায়?

আপনি যদি ঢাকা থেকে যেতে চান তবে গাবতলী থেকে পাটুরিয়া ঘাটের বাসে উঠবেন। পাটুরিয়া ঘাট থেকে ফেরী বা লঞ্চে নদী পার হলেই দৌলদিয়া পৌঁছে গেলেন। 

দৌলতদিয়া পতিতালয় কোথায় অবস্থিত?

দক্ষিণাচঞ্চলের রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার অন্তর্গত একটি ইউনিয়নের নাম দৌলতদিয়া। আর এই অঞ্চলের ফেরিঘাটে দৌলতদিয়া পতিতালয় অবস্থিত। 

ঢাকা থেকে দৌলতদিয়া কিভাবে যাব?

এ প্রশ্নের উত্তর উপরে দেয়া হয়েছে। আশাকরি এটার ভিন্ন কোন উত্তর দেয়ার প্রয়োজন নেই। 

দৌলতদিয়া পতিতালয়ে যাওয়ার উপায় কি?

আপনার প্রশ্নে ভুল হয়েছে। প্রশ্নটি হবে, জাহান্নামে যাওয়ার রাস্তা কোনদিকে। আপনার মাথা থেকে বাজে চিন্তা ঝেড়ে ফেলুন। একজন সূস্থ মস্তিষ্কের ব্যক্তি কখনো পতিতালয়ে যাওয়ার চিন্তাও মাথায় আনবে না। 

আপনি যদি মুসলমান হয়ে থাকেন, তবে শরীয়তের বিধান মেনে এসব থেকে দূরে থাকুন। আর আপনি যদি অন্য ধর্মাবলম্বী বা নাস্তিক হয়ে থাকেন, তবে অন্তত বিজ্ঞানস্মত জীবন-যাপন করুন। স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নশীল হোন। এইডস সহ নানান মরনঘাতি যৌন ব্যধিতে আক্রান্ত হওয়া থেকে নিজেকে নিরাপদ দূরত্বে রাখুন। 

শেষকথা

আমি কোন ট্রাভেলার্স বা ত্রাভেল গাইড নই। এই পোষ্টে আমি শুধুমাত্র আপনাকে দৌলতদিয়া ঘাটের পতিতাপল্লি সম্পর্কে সতর্ক করেছি। আমি আশাকরছি, এই পোষ্টের কোন তথ্য কেউই কখনো বাজে কাজে ব্যবহার করবেন না। 

সর্বোপরি, হে আল্লাহর বান্দা! আল্লাহকে ভয় করুন। তাঁর আদেশের অবাধ্য হবার বৃথা চেষ্টা করবেন না। একজন ব্যক্তি হিসেবে আপনি যেন কখনো আমাদের মতো এমন বিপদে কখনো না পড়েন সেজন্যই আমি এটি লিখতে বসেছিলাম। আর আমার বিশ্বাস আমি আপনাদের মাঝে এই ম্যাসেজটি পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছি। 

সুতরাং , কোনদিন ঐদিকে গেলে বিশেষভাবে সতর্কতা অবলম্বন করবেন । 

ফুটনোটঃ 
(ক) মাহমুদ - আমার ক্লাসমেট। একই মেসে থেকেছি দীর্ঘ সময়। যদিও আমরা ভিন্ন ভিন্ন ডিপার্টমেন্টের...! 

সোমবার, ১৬ জানুয়ারী, ২০১৭

এক নজরে "নকশী কাঁথার মাঠ"

''বই পর্যালোচনা''
বই এর নাম ঃ-  নকশী কাঁথার মাঠ।
লেখকঃ পল্লীকবি জসীমউদ্দীন।
ধরণঃ কাব্য।

কাব্যের সার-সংক্ষেপঃ-
পাশাপাশি দুটি গ্রামের দু'জন সাধারণ কৃষাণ-কৃষানীর অনবদ্য এক প্রণয় উপাখ্যান এটি।
গল্পের নায়ক রূপা ।
তাকে সবাই রূপাই বলে ডাকে।
পার্শবর্তী সব গ্রামে সেরা লাঠিয়াল হিসাবে তার পরিচিতি।
নৈলা গান বা বৃষ্টির জন্য গ্রামাঞ্চলে প্রচলিত গানের জন্য সাজু নামের অপরূপা কিশোরী যখন প্রথম
রূপাইর সামনে আসে,  তখনই মন বিনিময় হয় দুটো অবুঝ কিশোর-কিশোরীর।
তারপর আসে সামাজিক বাধা।
সে সকল বাধা পেরিয়ে চিরায়ত ঘটকালী প্রথায় একসময় বিয়ে হয় তাদের।
গ্রামে শুরু হলো কাইজ্জা(জমি, চর দখল নিয়ে কোন্দল)।
রূপাই সেরা #লাঠিয়াল।
তার ডাক পড়লো।
তৎক্ষণাৎ সে সাজুকে রেখে চলে গেল সেখানে।
অনন্য সুখের সংসার ছিল তাদের।
রূপাইয়ের বাঁশির সুরে রাত কাটতো সাজুর।
কিন্তু এত সুখ কি চিরদিন থাকবে? ? ?

ব্যক্তিগত অভিমতঃ-
চিরায়ত গ্রামবাংলার আবহমান আচার-প্রথা কে জানতে 'নকশী কাঁথার মাঠ' এর কোন তুলনা হয়না।

দীনেশ চন্দ্র সেনের ভাষায়, "জসীমউদ্দীন যদি কেবল নকশী কাঁথার মাঠ লিখতেন।
আর কোন কাব্যই না লিখতেন,
তবুও তার নাম বাংলা সাহিত্যে স্থায়ী আসন লাভ করত।"
আমার পড়া এ যাবত কালের শ্রেষ্ঠ কবিতার বই 'নকশী কাঁথার মাঠ'।
কবিতার প্রতিটা চরণ অনবদ্য।
ছত্রে ছত্রে যে নাট্যগুণ তা এক কথায় অনন্য!
প্রিয় বই নিয়ে কিছু লিখবো ভেবে দুঃসাহস নিয়ে এই পর্যালোচনাটা দিলাম!
আমি এক বসায় শেষ করেছি পুরো বইটা।
বইটি থেকে মাত্র কয়েকটি কবিতা পড়েছি ছাত্রজীবনে।
কিন্তু তা থেকে ধারণা পাইনি পুরো বই টি কেমন হবে/ হতে পারে।

কিছু বই কখনো পুরোনো হয়না!
'নকশী কাঁথার মাঠ 'তেমনি একটা বই।
এত সাবলীলতা খুব কম পেয়েছি কাব্যে।
জসীমউদ্দীন বলেই হয়তো সম্ভব হয়েছিল।
যারা এখনো পড়েননি, বলতে বাধা নেই তারা বাংলা সাহিত্যের এক অমূল্য রত্নের সাহিত্য -স্বাদ পাননি ।

শুক্রবার, ৬ জানুয়ারী, ২০১৭

বোন , আপনি কোন পথে যাবেন ?



বর্তমান প্রেক্ষাপটে আমার আপুদের সচিত্র কার্যকলাপের কিছু দৃশ্য তুলে ধরলামঃ- 
সময় থাকলে পড়বেন । এক্সেস কিছু যদি বলে থাকি তবে তা অবশ্যই জানাবেন... 
আর এই সমস্যা থেকে মুক্তির পথ দেখাবেন......

"মা" বোন, বউ, মেয়ে এইসব শব্দগুলো এক হয়ে যে মূল শব্দে রূপান্তরিত হয় তাই #নারী
নারী শুধু একটা শব্দ-ই না, তারা একটা সম্মানীত জাতি।
আর পুরুষ-মহিলা মিলে যে শব্দ তৈরি হয় তা-ই পিপলস আইমিন সমাজ। 
সৃষ্টিশীল পৃথিবীতে আমরা শ্রেষ্ঠজীব। 
আমাদের সম্মান অনেক, হোক ইহকাল বা পরকালেই। 
তারচেয়েও বড়কথা আমরা মুসলিম, আমাদের ধর্ম ইসলাম। 
আর শান্তির ধর্ম ইসলাম মানেই আপনি/আমি যা খুশি তা করতে পারবো না। 
কিছু ধরাবাঁধা নিয়মকানুন ফলো করে চলতে হবে। এটা শুধু নারীর জন্যে নয়, পুরো মানব জাতীর জন্য অপরিহার্য। ( যারা মুসলিম ধর্মের অনুসারী।) 
। 
মূল কথায় আসিঃ- 
বর্তমান সোস্যাল মিডিয়াতে 
"#ফেইসবুক" শীর্ষস্থানে আছে পৃথিবীতে। 
এটা এমন ভাইরাল, যে সামান্য একটা স্ট্যাটাস মুহূর্তেই ছড়িয়ে যায় হাজার/লক্ষ/কোটি মানুষের কাছে। 
ফেইসবুক আশীর্বাদ আবার অভিশাপ ও বটে।
নিউটনের সূত্র থেকে আমরা জানি; 
"To every action there is an equal & opposite reaction" 
নিউটন বলে গেছেন, মিথ্যে কি হয়? 
। 
ফেবুতে একজন ছেলের চেয়ে, একটি ফিমেল আইডির ফ্রেন্ড/ ফলোয়ার অনেক বেশি, প্লাস লাইক/কমেন্ট। 
হোক না ফেইক আইডি।
আপনাদের (মেয়েদের) বলছি,
আপনি আমার মায়ের জাত। 
তুমি আমার বোন, বউ, প্রণয়ী, বান্ধবীও। 
আপনাদের অবশ্যই ভেবেচিন্তে কথাবার্তা বলা উচিৎ, স্ট্যাটাস দেওয়া উচিৎ, কমেন্ট করা উচিৎ। 
আজকাল নিউজফিডে চোখ রাখলেই অশ্লীল পোষ্ট পরিলক্ষিত হয়। 
ছেলেদের সাথে সাথে মেয়েরা এখন পাল্লা দেওয়া শুরু করেছে। (ফেইক সব না, কিছু কিছু মেয়েও আছে)
পিকচার, আজেবাজে কমেন্ট আর মূলকাহিনী হচ্ছে রিলেশনশিপ স্ট্যাটাস। 
সম্পর্ক কি? কাকে বলে? তা আপনারা কতটা বোঝেন? 
দুদিন চ্যাট করলেই কঠিন সম্পর্ক হয়ে যায়, তাই না!!! 
যে চতুর্থ দিন রিলেশনশিপ স্ট্যাটাস দিয়ে দিলেন। (যাক সেটা পার্সোনাল ম্যাটার, হস্তক্ষেপ না করাই শ্রেয়)
একটা মেয়ে কিভাবে পারে অশ্লীল পোষ্ট দিতে? তারমাঝে কি লজ্জাশরম নেই? এতটা নির্লজ্জ, বেহায়াপনা মেয়েরা কি করে পাবলিক প্লেসে দেখাতে পারে? (আমি জানতাম মেয়েরা গোপনীয়তা পছন্দ করে।) 
তার কি কোন চিন্তা নেই? 
অন্যথায় ছেলেরা কিছু করলে মায়ের জাত, বলে পার পেতে চায় প্লাস গালাগাল দেয়। বাট ভার্চুয়ালে মেয়েরা (কিছু সংখ্যক) যে নিজেকে লুলামি করার জন্যে প্রস্তুত করে দেয় তা লক্ষ্যণীয়। কিছু পোষ্ট চোখে পড়ে যা সত্যিই ভাবিয়ে তুলে আছাড় মারে... 
মেয়ে-মেয়ে রিলেশনশিপ???
এটা ফান? কখনোই বাংলাদেশে (আমাদের মত ৯০ ভাগ মুসলিম রাষ্ট্রে) এই নষ্ট বিবেক ফান হতে পারেনা? 
আপনি কি জানেন এই রিলেশনশিপ এর নাম কি? আপনি কোন দুঃখে #সমকামী হতে যাবেন? আর যদি এতটা খারাপ/জঘন্য রুচির হোন তো তা আপনি বিজ্ঞাপনপত্র দিয়ে সবাইকে জানানোর কি আছে? 
ইজ ইট ক্রেডিট? ইজ ইট আইডল? বা কোনপ্রকার পুরষ্কার পাওয়ার যোগ্য? 
আপনি কি #সেলেব্রিটি হতে এভাবে চরিত্র বিলীন করবেন? তাও নারী হয়ে! 
নারী সম্পর্কে যেখানে "সূরা নিসা" পরিপূর্ণ একটি সূরা ই অবতীর্ণ করেছেন স্বয়ং সৃষ্টিকর্তা। 
না জানলে জেনে নিন। অনেক ফলপ্রসূ আপনার জন্যে।
। 
একজন নারীর একটু উল্টাপাল্টা স্ট্যাটাসে আমরা (ছেলেরা) অন্যান্য নারী সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করি, বাজে শব্দ ইউজ করে গালাগালি করে থাকি। 
কিন্তু সবাই কি এক? দোষ টা কার বলুন? একজনের দোষে সবাইকে ভুক্তভোগী হতে হয়। অথচ আপনার মানসিকতা কিরকম হওয়া উচিৎ কাইন্ডলি নিচে ফলো করুন।
"মাদার তেরেসা" নিজের জীবনের পুরোটা সময় মানবতার কাজে নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন।(নারী)
বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন (নারী জাগরণের অগ্রদূত) 
নারীদের বন্দী শিবির থেকে মুক্তি দিয়েছেন। দ্বিতীয় বিবাহ সত্ত্বেও স্বামীর প্রতি কি ভালবাসা "তাঁহারেই পড়ে মনে" কবিতা না পড়লে বুঝবেন না।
। 
এইরকম বহু নারী আছে যারা নিজের জীবন অকাতরে দিয়ে গেছেন মানুষের কল্যাণে। 
মানুষ কে সঠিক পথ দেখিয়ে গেছেন। পারলে ভালো উক্তি করতেন যা থেকে মানুষ শিখবে, জ্ঞান লাভ করবে। 
এরা শুধু নারী না মহীয়সী নারী ইতিহাস সাক্ষ্য।
। 
কই তারা তো বাজে পথ অবলম্বন করেন নি, মুখ দিয়ে বাজে মন্তব্য করেন নি । সামান্য সময় লোক পরিচিতি অর্জন করতে আপনি কেন নারী হয়ে এমনটি করবেন???
শেষমেষ, 
প্রশ্নটি শুধু তাদের জন্য যারা এমন ঘৃণিত কাজ করে,আবার বাধা দিলে বিপরীতে অপমান করে।
নেপোলিয়ন বলেছেন,
"শিক্ষিত মা দাও, শিক্ষিত জাতি দিবো"
এবার যা বোঝার নারী হয়ে আপনার বোঝার পালা। 
আপনি সন্ত্রাসী/জঙ্গী জন্ম দিবেন নাকি ভালো সুশিল, ভদ্র ছেলেমেয়ে...

শৈশবের স্মৃতি

মনে পড়ে গ্রামের সেই পুকুরের কথা। 
শৈশব , কৈশর সবই কেটেছে সেখানে। 
কত্ত স্মৃতি জড়িয়ে আছে সেথায়। 
আমি তো সাঁতার কাটাও শিখেছিলাম সেখানে... 
 পুকুর টা আমার বাড়ি থেকে কিছুটা পূর্ব দিকে অবস্থিত। 
যার পশ্চিম পার্শ্বে একটা হিন্দু বাড়ি। 
আগে একসময় সেখানে অনেক হিন্দুর বসবাস ছিল। 
এখন মাত্র একটি বাড়িই আছে। যেখানে মাত্র কয়েকজন থাকে। 
আই মিন একটা পরিবার । 
Ayub ANsary

 পুকুরের চতুর্পাশ্বে আবাদী জমি। 
পুকুরের উত্তর পাড়ে অবস্থিত বরেন্দ্র বহুমূখী উন্নয়নকল্প এর ডীপ টিউবয়েল। 
দিনরাত অবিরাম পানি উত্তোলন হয় সেখান থেকে । 
যার উপরেই নির্ভর করে হাজার হাজার মানুষের ভাগ্যের চাকা। 
যদিও ভাগ্য আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত। তবুও তো প্রচেষ্টা চালাতেই হবে। 
আর ফসল ফলানোর সকল প্রচেষ্টা বৃথা যাবে যদি পানির সরবরাহ না থাকে। 
প্রায় ৮০০ বিঘা জমির সেচের পানির যোগান আসে এই ডীপ টিউবয়েল থেকে। 
পুকুরের পূর্ব পার্শ্বে আমাদের ভিটে জমি আছে। 
যেখানে সারাবছর তরি-তরকারী ফলানো হয়। 
বাবা সেখানে হরেক রকম সবজী ফলাতো... 
। 
মাঝে মাঝে পুকুর থেকে পানি নিয়ে সেচের কাজ চালানো হতো। 
পুকুরে আমার অনেকটাই দখলদারী চলতো। 
কিন্তু , 
কিছুদিন পর দেখতে পেলাম পুকুরের পানি ছুঁতে গেলেই আমি জরাক্রান্ত হয়ে পড়ি। 
সে কি জ্বর !! 
এক সপ্তাহ জুড়ে তার প্রভাব থাকতো... 
তবুও কোন না কোন কারণে সেই পুকুরে যেতে হতো। 
এক পর্যায়ে লক্ষ্য করলাম ঐ পুকুর আমার জন্য হারাম। 
যতই প্রয়োজন থাকুক না কেন আমি সেখানে যেতাম না । 
পুকুর আমার জন্য হারাম বলে নিজেকে গুটীয়ে নিলাম । 
তবে, 

এখন রোজ পুকুরেই গোসল করি। আর হ্যাঁ, বাধ্য হয়ে করি