Cute Orange Flying Butterfly সেই স্বপ্নটি ~ ‎অচিনপুরের আইয়ুব‬
আস-সালামু আলাইকুম। আমি আইয়ুব আনসারি। আমার লেখাগুলো পড়তে প্রত্যহ ব্লগটি ভিজিট করুন

মঙ্গলবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৬

সেই স্বপ্নটি



শীতের সকাল। 
ঘন কুয়াশায় ঢেকে আছে চারিপাশ। 
আকাশ হালকা ফর্শা হয়ে উঠেছে মাত্র। 
কানে ফজরের আজান ভেঁসে আসছে। 
আজানের শব্দে ঘুম ভাঙলো অহনার। 
ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়েই নামাজ আদায় করলো। 
এমন না যে নিয়মিত নামায আদায় করে, তবে চেস্টা করে। 
আজ সে বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে পথ চলতে যাচ্ছে। 
যে করেই হোক আজ সেই স্বপ্নের পিছু নিতেই হবে। 
রোজ সে একটা স্বপ্ন দেখে। রোজ তার পিছু নেয়। 
কিন্তু যখনই সময় আসে তার মুখ দেখার, তখনি সে বুঝতে পারে যে, সে তো স্বপ্নেই আছে। 
আজ তার পছন্দের নীল স্কার্ফটাই পরা আছে। হাড় কাঁপানো ঠান্ডা পড়ছে কয়েকদিন ধরে। 
এই প্রভাতে বের হওয়ার দুঃসাহস কেউ করে না। 
কিন্তু তার জিদ সে বের হবেই,,, সত্যটা যে জানতেই হবে!!!!!!
এইসব ভাবতে ভাবতে রুমের দরজা খুললো অহনা। 
কুয়াশার প্রভাবে বোধহয় নিজের থেকে এক ইঞ্চি দূরের কিছুই দেখা যাবেনা। শব্দহীন পায়ে গৃহ ত্যাগ করলো। 
কেও দেখলে যে কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে। 
কারন সমাজ কখনোও মেয়েদের একা বের হওয়াটা কে মেনে নিবে না। 
তাও আবার ভোরবেলায়......।।
.
কুয়াশাচ্ছন্ন নরম কোমল ঘাসের উপর পা ফেলতেই অহনা শরীরের বিভিন্ন শিরা-উপশিরায় যেন ঠান্ডার অনুভূতি লাভ করে। 
শরীরের মাঝে ইঞ্জেকশন দিয়ে ভাইরাস প্রবেশ করালে সেকেন্ডের মধ্য পুরো শরীরে যেভাবে ছড়িয়ে যায় ঠিক সেভাবেই ঠান্ডা ছড়িয়ে পড়লো অহনার শরীরে। 
পূব আকাশে সুর্যের লাল আভা পরিলক্ষীত হচ্ছে। 
সময়ের ব্যবধানে সূর্যের মিষ্টি আলো ছড়িয়ে যেতে লাগলো চারপাশে। 
ঘাসের ডগায় লেগে থাকা শিশির কণা গুলো মুক্তোর মত জ্বলছিলো। 
অহনা ঘাসের উপর হাঁটতে হাঁটতে এতটাই বিভোর হয়ে গিয়েছিলো যে, তার পায়ের নুপুরটা কখন খুলে যায় তা একদমই টের পায়নি। 
প্রকৃতির প্রেমে মত্ত হয়ে চলতে থাকে দূর অজানায়। 
নিঃশব্দ রাজ্যে হটাৎ করেই একটা শব্দ কানে আসে। 
আরে, এটাতো সেই আওয়াজ!!!!!!!!!!!!!
পিছনে ফিরতে তার অনেক ভয় লাগছিল। 
রোজ এই শব্দ টা কানে আসে। অনেকটা পরিচিত শব্দ।
আজ সে দেখবেই এই শব্দের উৎস কোথায়!! 
একদিকে ভয় কাজ করছিল অপরদিকে আত্মপ্রত্যয়। 
সাহসীকতার সাথে আস্তে আস্তে ঘুরে তাকালো। 
এক অস্ফুর্ত ছায়ামুর্তি আবিষ্কার করলো সে। 
সুর্যের ঠিক সামনেই দাঁড়িয়েছে, যার জন্য তার চেহারাটা ঠিক মতো দেখা যাচ্ছে না। 
সবকিছু মিলিয়ে থমকে দাঁড়ায় সে। 
ছায়ামূর্তি টি ভালমতো বোঝার চেষ্টা করলো... 
দেখতে অনেকটা মানুষের মতো। কুয়াশাচ্ছন্ন চারিপাশ। তাই বুঝে উঠতে পারছে না কি সেটা আসলে। 
এবার ছায়াটি অগ্রপাণে অর্থাৎ অহনার দিকে এক পা, দু-পা করে এগিয়ে আসতে লাগলো। 
তার হাতে একটা বস্তু পরিলক্ষিত হচ্ছে। 
ভালমত বোঝার চেষ্টা করলো। 
এতক্ষণে লোকটি অনেক কাছাকাছি চলে এসেছে। 
তার হাতে একটা নুপুর। 
এবার একেবারেই কাছাকাছি এসে গেছে। 
আরেঃ, এতো আমার পায়ের নুপুর। 
ওনি পেলেন কি করে!!
তবে যা হোক, নুপুর নেয়ার ইচ্ছে নেই। 
শুধু একটি বার তাকে দেখার ইচ্ছা... 
আজ কেমন জানি ভিন্নধর্মী অনুভূতি জেগেছে মনে। 
খুব করে দেখবে তাকে। 

খুব কাছাকাছি দাঁড়িয়ে আছে দুজনে। এখন মন ভরে দেখার পালা। 
এমন সময় এলার্ম ঘড়ির এলার্ম বেজে উঠলো।
ঘুম ভাঙলো, আজোও দেখা মিললো না তার। 
কিছুক্ষণ নিশ্চুপ থাকার পর আবিষ্কার করলো আজকের এটিও স্বপ্নই ছিল। 

যেমন স্বপ্ন সে দেখেছিল গত মাসে। 
সেই দিনের মতই অনুভুতি নিয়ে দিনটা শুরু করলো আজ...... 

মূল লেখাঃ- রেবা হাসান( সপ্নের আস্কারা )
আংশিক এডিটঃ- আইয়ুব আনসারি

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন